আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারতীয় নাগরিক ও মা সাদিকা সাঈদের কাছ থেকে শিশুসন্তান নিয়ে অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে যান বাংলাদেশি বাবা শাহিনুর টি আই এম নবী। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
আজ বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মায়ের কাছ থেকে শিশু সন্তান নিয়ে পালিয়ে যাওয়া বাবা শাহিনুরের আজ আদালতে উপস্থিত হওয়ার ধার্য দিন ছিল।
ভারতীয় মা সাদিকা সাঈদের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিশুর বাবাকে হাজির করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও গুলশান থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
আগামী ২১ নভেম্বর বিকেল তিনটার মধ্যে শাহিনুর টি আই এম নবী ও শিশু সন্তানকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে। তবে তার আগেই তিনি পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন।
গত ১৬ নভেম্বর শিশু সন্তানকে নিয়ে তার বাবা বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনুর টি আই এম নবীকে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একই বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
শিশুর মা ভারতীয় নাগরিক সাদিকা সাঈদের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট দুই মাসের জন্য ওই শিশুকে ভারতীয় নাগরিক মা সাদিকা সাঈদের হেফাজতে রাখতে আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভলাপমেন্টের (ফ্লাড) ব্যবস্থাপনায় থাকবে ওই মা ও শিশু। তবে বাংলাদেশি বাবা সপ্তাহে তিনদিন সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শিশুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এই দুই মাস সাদিকা সাঈদের পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা রাখতে বলা হয়।
তবে হাইকোর্টের আদেশের পর শিশুর বাবা তার সন্তানকে উন্নত পরিবেশে গুলশান রাখার ইচ্ছার কথা জানান। শিশুর মঙ্গলের কথা চিন্তা করে শিশুর মা রাজি হন। এরপর থেকে গুলশান ক্লাবেই শিশুর মাসহ তারা অবস্থান করছিলেন।
এক পর্যায়ে বেড়ানোর কথা বলে গুলশান ক্লাব থেকে শিশুকে নিয়ে যান তার বাবা। তবে এরপর আর শিশুকে গুলশান ক্লাবে মায়ের কাছে দিয়ে যাননি বাবা। এর মধ্যে শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে জিডিও ও মামলাও করা হয়।
পরে গত ১৫ নভেম্বর শিশুটিকে হাজির করতে আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু শিশুর বাবা আইনজীবীর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করেননি। এ কারণে আইনজীবী থেকে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।