নতুন প্রধান বিচারপতি হলেন সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারক বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আপীল বিভাগের বিচারক হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন। শুক্রবার বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে শপথ নেবেন তিনি।
নিয়ম অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ফাইলে রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর প্রধানমন্ত্রীর দফতর হয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পরই গেজেট প্রকাশ হবে।
আপীল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীকে ডিঙ্গিয়ে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগে ফের ভঙ্গ হল জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের প্রথা। এ নিয়ে দেশের ইতিহাসে প্রধান বিচারপতি নিয়োগে নবম বারের মতো সিনিয়রিটিকে ছাপিয়ে জয় হল সুপারসিডের।
প্রসঙ্গত, আগামী ৩১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ ডিসেম্বর তাঁর শেষ কর্মদিবস।
দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা) পদত্যাগ করার ৮৫ দিনের মাথায় ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরের দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।
এক নজরে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
১৯৫৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার জেলার খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তাঁর পিতার নাম আব্দুল গফুর মোল্লা। ১৯৭২ সালে খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং সাতক্ষীরা সরকারি পিসি কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেন। ১৯৭৬ সালে সাতক্ষীরা সরকারি পিসি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর ঢাকার ধানমন্ডি ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাশ করেন।
তিনি ১৯৮১ সালের ২১ আগস্ট আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৮৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৯ সালের ২৭ মে আপিল বিভাগের আইনজীবী হন।
২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ তাঁকে আপিল বিভাগের বিচারক নিযুক্ত করা হয়। ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যাবেন।
বিচারক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার আগে হাসান ফয়েজ সিদ্দিক খুলনা সিটি কর্পোরেশন, কুষ্টিয়া পৌরসভা, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন সংস্থা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের প্রধান আইন উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবেও কাজ করেছেন।
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০১৫ সাল ৩০ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।