ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় লঞ্চের মালিক মো. হাম জালাল শেখকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মাহবুব আলম তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালতে এদিন জামিনের পক্ষে শুনানি করেন আসামির আইনজীবী এম. মজিবুল হক কিসলু। অন্যদিকে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে জামিনের বিরোধিতা করেন কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর (সিএসআই) জহিরুল ইসলাম।
শুনানিতে আসামি পক্ষের আইনজীবী বলেন, একই বিষয় নিয়ে একাধিক আদালতে মামলা চলতে পারে না। নৌযান সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার করার জন্য অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এর ধারা ৪৭ অনুযায়ী নৌ আদালত প্রতিষ্ঠিত করা হয়। উক্ত অধ্যাদেশের ৭৩ ধারা অনুযায়ী নৌযান সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার করার জন্য নৌ আদালতই উপযুক্ত। তাছাড়া বাংলাদেশ সংবিধান ৩৫ (২) অনুচ্ছেদে বলা আছে এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাবে না। এছাড়া লঞ্চের ফিটনেস, রুট পারমিট সবকিছু সঠিক ছিল। আসামি ওইদিন লঞ্চে ছিল না।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে সার্বিক বিবেচনায় বিচারক আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
ঢাকার সূত্রাপুর থানায় দাখিলকৃত একটি মামলায় মো. হাম জালাল শেখকে গত ২৭ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে।
এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর জনস্বার্থে অ্যাডভোকেট মো. নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে বরগুনা চিফ জুডিসিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লঞ্চের মালিক মো. হাম জালাল শেখকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
এরপর বরগুনা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. শহিদুল ইসলাম বরগুনা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লঞ্চ মালিককে ৪ জানুয়ারী শ্যোন এরেস্ট দেখানোর আবেদন করে। ওই আবেদন মঞ্জুর করে একই দিন মালিককে শ্যোন অ্যারেস্ট গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন বিচারক। এ প্রেক্ষিতে আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করলে (আজ) বৃহস্পতিবার শুনানির দিন রাখেন আদালত।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ২৩ ডিসেম্বর বরগুনার উদ্দেশে ছেড়ে আসা অভিযান-১০ লঞ্চে রাত ৩টায় ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীতে হঠাৎ আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্য লঞ্চে আগুন ছড়িয়ে যায়। এতে ৪৭ জন যাত্রী মারা যায় এবং ৭২ জন যাত্রী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। বহু যাত্রী নিখোঁজ হন।