টাকার বিনিময়ে জুয়েল নামের এক যুবককে ভুয়া আসামি সাজিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছিলেন মাদক মামলার ৬ মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাকির ওরফে সোহেল ওরফে গাজী। তবে শেষ রক্ষা হলো না, অবশেষে গ্রেফতার হয়ে শেষমেশ হাজতে যেতেই হলো তাকে।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের নূরবাগ এলাকা থেকে গত বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে জাকিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করে বন্দর থানা পুলিশ। এরপর জাকিরকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন নারায়ণগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শামসুর রহমান।
একইসঙ্গে এ ঘটনায় বিচারক আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর জাকির ও জেলে আটক জুয়েলকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন এবং মামলার আইনজীবীকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
ঘটনার পূর্বাপর
বন্দরের নবীগঞ্জ নূরবাগ এলাকার মৃত সামাদ মিয়ার ছেলে জাকির ওরফে সোহেল ওরফে গাজীকে নারায়ণগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শামসুর রহমান গত ১০ আগস্ট মাদক মামলায় ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
জাকির সাজা থেকে নিজেকে আড়াল করতে টাকার বিনিময়ে বন্দরের কদম রসুল এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে জুয়েলকে আসামি সাজিয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর একই আদালতে আপিলের শর্তে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ কারা কর্তৃপক্ষ কারাবন্দিদের ভর্তি রেজিস্টার যাচাই-বাছাই করে দেখেন জাকির নাম পরিচয়ে যিনি জেলহাজতে আটক আছেন আসলে তিনি প্রকৃত আসামি নন। এ নিয়ে জুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সত্য ঘটনা স্বীকার করেন এবং প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষ গত ১৫ সেপ্টেম্বর একটি প্রতিবেদন আকারে ঘটনাটি আদালতকে অবগত করেন। আদালত গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলার প্রকৃত আসামি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে পুনরায় সাজা পরোয়ানা জারি করেন।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জাকিরকে গ্রেফতার করে বন্দর থানার এসআই আব্দুল বারেক হাওলাদার বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করেন। আদালত আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর জাকির ও জেলে আটক জুয়েলকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন এবং মামলার আইনজীবী রেবেকা সুলতানাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বেঞ্চ সহকারী জহিরুল ইসলাম জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ২০৭, ২০৮ ও ৩৪ ধারায় নারায়ণগঞ্জ আদালতের দ্বিতীয় অঞ্চলে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।