গুম সংক্রান্ত অভিযোগ: ডিজিএফআই ও এনএসআইসহ সব সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে

ডিজিএফআই ও এনএসআইসহ সব সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে

গুম সংক্রান্ত অভিযোগ

সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইসহ দেশের সব নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে গুম সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা দায়ের করা যাবে।

গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ ও সংযুক্ত কর্মকর্তা মো. বুলবুল হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটেলিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) ও কোস্ট গার্ডসহ দেশের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে মামলা দায়ের করা যাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে কেউ গুমের সাক্ষী ছিলেন বা তার পরিবারের সদস্য বা আত্মীয় বা অন্য কেউ ০১৭০১৬৬২১২০ এবং ০২-৫৮৮১২১২১ নম্বরে ফোন করে অথবা edcommission.bd@gmail.com ই-মেইল করে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে পারেন।

আরও পড়ুন: গুম হওয়া ৬৪ জনের তালিকা তদন্ত কমিশনে

কমিশনের কার্যালয়ের ঠিকানা: ৯৬, গুলশান অ্যাভিনিউ, ঢাকা। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সরাসরি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করা যাবে।

তবে অভিযোগ দায়েরের জন্য নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী হটলাইন নাম্বারে ফোন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগে অন্যান্য তথ্যের পাশাপাশি অভিযুক্ত গুমের নির্দিষ্ট বিবরণ, ঘটনার স্থান, তারিখ ও সময়, অভিযোগকারী ও তার বাবা-মার নাম, ভুক্তভোগী ও তার বাবা-মার নাম, অভিযোগকারীর সঙ্গে ভুক্তভোগীর সম্পর্ক, অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগীর ডাকযোগ ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল এবং অভিযুক্তের ঠিকানা বা অন্যান্য বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

অভিযোগে বর্ণিত গুমের ঘটনার প্রমাণাদিসহ সাক্ষীদের নাম ও ঠিকানার তালিকা এবং অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগীর (যদি থাকে) জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে। কমিশন প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি বা তার প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

আরও উল্লেখ করা হয় যে, কমিশন দেশব্যাপী গুম সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ এবং সহায়তা গ্রহণের উদ্যোগ নেবে।

গুমের শিকারদের সন্ধানে সরকার ২৭ আগস্ট একটি অনুসন্ধান কমিশন গঠন করে।

অবসরপ্রাপ্ত হাইকোর্ট বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনের লক্ষ্য হলো নিখোঁজ ব্যক্তিদের শনাক্ত করা এবং তাদের গুমের পরিস্থিতি তদন্ত করা।

কমিশনের অপর চার সদস্য হলেন হাইকোর্টের আরেক সাবেক বিচারপতি বিচারপতি মো. ফারিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান ও সাজ্জাদ হোসেন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস।

গত বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রিফাত আহমেদ, পূর্ববর্তী সরকারের সময় বলপূর্বক নিখোঁজ হওয়া ৬৪ জনের একটি তালিকাসহ বিভিন্ন তথ্য তদন্ত কমিশনে প্রেরণ করেন, যা ‘বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে’ গঠিত হয়েছে।