প্রতিদিন ৫ মিনিট আগে অফিস আসতে বাধ্য করেন বস, মামলা লড়ে ওভারটাইমের ৫৯ লাখ আদায় কর্মীর

প্রতিদিন ৫ মিনিট আগে অফিস আসতে বাধ্য করেন বস, মামলা লড়ে ওভারটাইমের ৫৯ লাখ আদায় কর্মীর

কোনও সংস্থায় কাজে যোগ দিলে কর্মীদের বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। বেসরকারি সংস্থায় চাকরির ক্ষেত্রে কিছু কিছু নিয়মে শৈথিল্য থাকলেও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে নিয়মের বাঁধন অনেকটাই কড়া থাকে।

আর সেই সরকারি সংস্থার অফিসের নিয়মের ফাঁক নজরে এনেই মোটা টাকা আদায় করে নিল এক কর্মী। জাপানের একটি সরকারি সংস্থার অফিসে যথাযোগ্য চাকরির নিয়ম মানার কারণে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হল সংস্থার বসকে।

আশ্চর্যের বিষয় সেই অফিসের এক কর্মী মামলা করেছিলেন অফিসের বসের বিরুদ্ধে। কারণ কর্মীর বস তাদের অফিসের নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে আসতে বাধ্য করতেন।

জানা গেছে, টানা ৩ বছর ধরে চলেছে এই রীতি। এরপরে এক নতুন বস আসেন সেই অফিসে। আর তিনিই কর্মীদের মদত দেন যাতে তারা সংস্থার থেকে ওভারটাইম দাবি করেন।

মাত্র ৫ মিনিট আগে আসতে বলায় বড় বিপদ

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্র অনুসারে, জাপানের বিভিন্ন শহরে সরকারি কর্মীদের দৈনিক মিটিংয়ের ক্ষেত্রে অফিসের নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশিকা অনুযায়ী জাপানের জিন্নান টাউন এবং হোনসু দ্বীপে ১৪৬ জন কর্মী এর শিকার হন। তাদের অফিসে আসার নির্ধারিত সময় ৮.৩০টা হলেও তাদের ৮.২৫-এ আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

সেই সময়ের মেয়র হিডিও কোজিমা এই নীতি চালু করেছিলেন। এমনকী বলা ছিল যে আগে না আসতে পারে চাকরিও চলে যেতে পারে। ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে এই নির্দেশিকা কার্যকর হয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে মেয়র কোজিমা পদত্যাগ করেন।

আর তারপরেই কর্মীরা তাদের এই দৈনিক ৫ মিনিট করে আগে হাজিরা দেওয়াকে ওভারটাইম হিসেবে তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তারা এই মামলা দায়ের করেন জাপানের ফেয়ার ট্রেড কমিশনে, দাবি জানান যাতে ৩ বছরের ওভারটাইম দেওয়া হয় তাদের।

গত বছর নভেম্বর মাসে কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাপানের সরকার ৫৯ লক্ষ টাকা ওভারটাইম হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। তবে এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়নি কর্মীদের।

সমাজমাধ্যমে এই ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। শ্রমের নিয়ম ও নীতির যথাযথ অভ্যাসের দাবি জানানো হয়েছে নেটিজেনদের পক্ষ থেকে এবং কর্মীদের অধিকার রক্ষার কথাও বলা হয়েছে।