প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারী-পুরুষ দু’জনে মিলে কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে। নারীদের সুযোগ দিলে তারা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে তা আজ প্রমাণিত। সচিব থেকে শুরু করে যেখানে মেয়েদের দায়িত্ব দেয়া যায় সেখানেই তারা দায়িত্ব পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, সভ্য দেশে নারীরা যা না পারে বাংলাদেশে তা পারে। সর্বক্ষেত্রে নারীদের কাজের সুযোগ দেয়ার কারণেই দেশ আজ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) নারী দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। এই নারীদের পেছনে রেখে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি সম্ভব না। দেশের উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর উন্নয়ন,অংশগ্রহণ ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারী-পুরুষ সকলে মিলে কাজ করলেই আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ৯ বছরে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, গ্রামে নারীদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য প্রাথমিকে ৬০ভাগ নারী শিক্ষক রাখার বিধান করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটি সবেতনে ৬ মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করেছি। এ ছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতিত নারীদের ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জেলা উপজেলায় ৬০টি ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেল ও ন্যাশনাল হেল্পলাইন (১০৯) চালু করা হয়েছে। ভিজিএফ, ভিজিডি ও জিআর কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমেও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, সশস্ত্রবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণের অগ্রদূতদের, যাদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠায় আজ নারীর সমান মর্যাদা বর্তমান অবস্থানে পৌঁছেছে তাদের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা-বোনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
নারী জাতির গর্ব, যিনি প্রথম সকল বাধা ভেদ করে পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সেই বেগম রোকেয়াকে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।