তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিল করে সেই ধারার বিষয়বস্তুগুলো ঘুরিয়েফিরিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়েছে।
আইনমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মাদ শহিদুল হক, দ্যা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউজ টু ডে’র সম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন আহমেদ, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, দি নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবির, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদসহ ১৯টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক। এছাড়া বৈঠকের শুরুতে উপস্থিত না থাকলেও পরে যোগ দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
জানা গেছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিল করে সেই ধারার বিষয়বস্তুগুলো ঘুরেফিরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাখা হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হওয়ার পর এটি ঘিরে বিতর্ক ও সমালোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আপত্তি ওঠা কিছু ধারা বাদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল।
কিন্তু গত ৯ এপ্রিল সোমবার জাতীয় সংসদে আইনটি উত্থাপনের পর দেখা যায়, তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এমনকি ‘ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তি’-বিষয়ক ৩২ ধারার মতো আরও কঠিন একটি ধারা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বিলটিতে আপত্তি জানিয়েছে। পরে বিলটি চার সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত বা তাদের প্রতিনিধিরাও আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন, দেশে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও ইউনিয়ন আইনটির কঠোর ও বিতর্কিত কিছু ধারা বাদ দেয়ার দাবি তোলে। এসব দাবি আমলে না নিয়ে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া খসড়াটিই প্রায় হুবহু গত ৯ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বিল আকারে উপস্থাপন করা হয়।
বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, বিলটি সংসদীয় কমিটিতে গেলে পর্যালোচনা করে সংযোজন-বিয়োজন করার সুযোগ থাকবে। কোনো উপধারা যুক্ত করতে হলে সেটিও স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে সংযোজন সম্ভব হবে।