বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন

সামুদ্রিক মৎস্য আইন সংশোধনের দাবি

নতুন সামুদ্রিক মৎস্য আইন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন।

আজ সোমবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নতুন আইনের ধারা-উপধারা ব্যবসাবান্ধব হয়নি বরং ব্যবসায়ীদের ওপর খড়গ চাপানো হয়েছে। বিভিন্ন ধারা সাংঘর্ষিক, যা সংশোধন করা প্রয়োজন। কিছু ধারা বর্তমান ফৌজদারি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, শাস্তির বিধান অনেক বেশি কঠিন করা হয়েছে। লঘু অপরাধের জন্য গুরু দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আইনের বিভিন্ন ধারা এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

আইনের কঠোরতার কারণে ট্রলারে কর্মরত স্কিপার, সেইলর ও কর্মকর্তারা আতঙ্কিত হয়ে গত ৫ ডিসেম্বর মাছ আহরণ বন্ধ রেখে সাগর থেকে চট্টগ্রাম ফিরে এসেছে। মাছ আহরণ মৌসুমে ব্যবসায়ীরা বড় ক্ষতির মুখে পড়বে। একদিকে ট্রলারের খরচ অন্যদিকে ব্যাংকের দেনা শোধের ঝুঁকি সামাল দিতে হচ্ছে।

গভীর সমুদ্রে মাছ ও চিংড়ি আহরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, দেশের অভ্যন্তরে আমিষের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একক সংগঠন এ অ্যাসোসিয়েশন। সরকারের সুনীল অর্থনীতি স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে সংগঠনটি। মা চিংড়ি আহরণ করে হ্যাচারিতে সরবরাহ করায় এ শিল্প বিকাশ লাভ করেছে। খামারে ঘেরে উৎপাদিত চিংড়ি ও মাছ ১৫০টি কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে রফতানি হচ্ছে, যা ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক মো. আবদুল ওয়াহেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গত ১৬ নভেম্বর আইনটি সংসদে পাস হয়। ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ২০২০ সালের ১৯ নম্বর আইন হিসেবে গেজেট নোটিফিকেশন হয়েছে।

সামরিক আমলে প্রণীত ‘দি মেরিন ফিসারিজ অর্ডিনেন্স ১৯৮৩’ বাতিল করে সংশোধনসহ বাংলা ভাষায় আইনটি যুগোপযোগী করে করা হয়েছে। নতুন আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে ৫৫, ৫৭ ও ৫৮ ধারা।

নতুন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমায় সরকার কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জলসীমা অর্থ্যাৎ মেরি কালচারাল অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং অন্য কোনো সামুদ্রিক জলসীমায় সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও উন্নয়নসহ মৎস্য আহরণ করা যাবে।

এই আইনের ফলে সরকার নির্ধারিত পরিমাণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন (টনের হিসেবে) যান্ত্রিক মৎস্য আহরণের নৌযানকে মাছ ধরতে চিহ্নিত এলাকায় মৎস্য আহরণ অথবা অন্যান্য নৌযান দিয়ে মৎস্য আহরণে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, দেশে স্টিল ও কাঠের বডির ২৫৮টি বড় ফিশিং ট্রলার আছে। বছরে এসব ট্রলার দেড় লাখ টন সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ করে। এর মধ্যে রফতানি হয় ৫ হাজার টন।