বাস্তবায়ন হয় না আইন কমিশনের সুপারিশ

আইন কমিশন ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকরণ অপরাধ আইন’ তৈরির খসড়া প্রণয়ন করেছে ২০১৬ সালের ২১ মার্চ। ২০১৫ সালে আইনটি তৈরির ব্যাপারে কমিশনের মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ বিষয়ে প্রচলিত আইন, রীতিনীতি, বিচারকার্যক্রম পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করা হয়। কমিশন মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক, আইনজীবী, বিভিন্ন সংগঠন, সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও জনগণের কাছ থেকে মতামত নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার পর এ সুপারিশ তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়; কিন্তু ওই সুপারিশ আলোর মুখ দেখেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে আইন কমিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ২২ বছরে প্রায় দেড়শ নতুন আইন প্রণয়ন বা বিদ্যমান আইন সংস্কারের জন্য সরকারকে সুপারিশ করেছে; কিন্তু সরকার তার প্রয়োজনে হাতেগোনা দুই-চারটি বিষয়ে যে সুপারিশ চেয়ে পাঠিয়েছে, সেগুলো ছাড়া কমিশনের স্বউদ্যোগে পাঠানো সুপারিশের কোনোটাই বাস্তবায়নের নজির দৃশ্যমান নয়। সব সুপারিশই ফাইলবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। অথচ একেকটি সুপারিশ তৈরি করতে কমিশনের মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর সময় লেগে যাচ্ছে। গবেষণা কাজ পরিচালনায় ব্যয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ ছাড়া কমিশনের চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসেবে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালন করেন; কিন্তু কমিশনের সুপারিশ আমলে না নেওয়ায় তা জনগণের কোনো কল্যাণে আসছে না। অথচ আইনের ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে দেশের জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির স্বার্থে এই কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা।

(কবির হোসেন/ আমাদের সময়)