১৯৪০ সালে এলএলবি ডিগ্রি; চলতি বছর ৯৮ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর!

ভারতে ৯৮ বছর বয়সে এক ব্যক্তি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ওই ব্যক্তির নাম রাজ কুমার। বিহারের নালন্দা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলতি বছরে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি।

পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, পাটনার নালন্দা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবর্তনে মেঘালয়ের গভর্নর গঙ্গা প্রসাদ উপস্থিত ছিলেন। কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন তিনি। অশীতিপর রাজ কুমারের হাতেও সনদ তুলে দেন মেঘালয়ের গভর্নর। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পর সাংবাদিকদের রাজ কুমার বলেন, ‘আমি আজ খুব খুশি। আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। স্নাতকোত্তর শেষ করার স্বপ্ন অবশেষে পূরণ করতে পেরেছি আমি। তরুণদের পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া উচিত। শুধু ক্যারিয়ারের পেছনে ছুটলে হবে না।’

আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৮ সালে স্নাতক শেষ করেছিলেন রাজ কুমার। ১৯৪০ সালে তিনি আইন বিষয়ে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু জীবিকার তাগিদে কর্মজীবন শুরু করায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে ভর্তি হতে পারেননি তিনি। ঝাড়খন্ডের ক্রিশ্চিয়ান মিকা ইন্ডাস্ট্রিতে ‘আইন কর্মকর্তা’ হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন রাজ কুমার। ১৯৮০ সালের দশকে তিনি ব্যবস্থাপক হিসেবে অবসর নেন।

রাজ কুমারের ছেলে সন্তোষ কুমার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। পাটনার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এনআইটি) শিক্ষক ছিলেন তিনি। সন্তোষ বলেছেন, ‘বাবার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আমরা খুব খুশি। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমার বাবার চলাচলের জন্য হুইলচেয়ার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কারণ সিঁড়ি ভাঙতে তাঁর সমস্যা হয়। কিন্তু একজনের সাহায্য নিয়ে হেঁটেই মঞ্চে ওঠেন বাবা। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েই সনদ নিয়েছেন তিনি। মেঘালয়ের গভর্নর গঙ্গা প্রসাদ আমার বাবার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আপনি অনুপ্রেরণার উৎস।”’

নালন্দা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এসপি সিনহা জানিয়েছেন, এ বছর মোট ২২ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ধরনের সনদ দেওয়া হয়েছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ২ হাজার ৭৮০ জন শিক্ষার্থীর একজন হলেন রাজ কুমার। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়া সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি।

এসপি সিনহা পিটিআইকে বলেন, ‘নালন্দা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি অনেক বড় অর্জন। এই বয়সে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ কুমারকে অভিবাদন জানাই। পড়াশোনার ব্যাপারে তাঁর দৃঢ়তা দেখে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।’ সিনহা আরও বলেন, তরুণদের প্রেরণা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজ কুমারের নোটবুকটি সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।