খালেদার রায় : ৬ বিকল্প সামনে রেখে কারা অধিদফতরের প্রস্তুতি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হলে তাকে কোথায় রাখা হবে- সে প্রশ্ন এখন সবখানে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কোনো বিশেষ সাবজেলে না অন্য কোথাও রাখা হবে তা নিয়ে ভাবছে কারা অধিদফতর। এরই মধ্যে রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের নারী সেলের ঘষামাজার কাজ শুরু হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে কাশিমপুরের মহিলা কারাগারের একটি ভিআইপি সেলও। আদালত খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে ভিআইপি বন্দি হিসেবে তার জন্য একাধিক স্থানকে সাবজেল ঘোষণার বিকল্প চিন্তাও রয়েছে কারা অধিদফতরের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কারা মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এখনও নিশ্চিত নই খালেদা জিয়ার মামলার রায় কি হবে? তবে সাজা হলে খালেদা জিয়াকে রাখা হতে পারে তার নিজ বাড়িতে, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের মহিলা সেলে, ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে, কেরানীগঞ্জ কারাগারে, সংসদ ভবনের বিশেষ ডিভিশন সেলে অথবা ঢাকার যে কোনো এলাকায়। তিনি বলেন, ৪ ঘণ্টা সময় পেলে তাকে যে কোনো স্থানে রাখার মতো ব্যবস্থা করার সক্ষমতা রয়েছে কারা অধিদফতরের।’

তবে এরই মধ্যে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার সরেজমিন নাজিমউদ্দিন রোডের পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েনের দৃশ্য চোখে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেল।

কারা অধিদফতরের অপর একটি নির্ভরযোগ্যে সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার সাজা হলে তাকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার সম্ভাবনাই বেশি। সেখানে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ডে-কেয়ার সেন্টারটি ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে।

সূত্রটি বলছে, সেখানে অতিরিক্ত ১০ জন কারারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ভেতরে-বাইরে মিলে ২ জন ডেপুটি জেলারের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদের মধ্যে মহিলা জেলার কারাগারের ভেতরে এবং পুরুষ জেলার বাইরে অবস্থান করবেন।

সূত্রটি জানায়, সেখানে রাখা হলে সব দিক থেকেই ভালো হবে। কেননা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু মামলা রয়েছে। সেখান থেকে তাকে আদালতে আনা নেয়ার কাজও সহজ হবে। কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে মহিলা সেল এখনও সম্পন্ন হয়নি। কাশিমপুরে রাখা হলে আদালতে আনা-নেয়ার কাজে সমস্যা হবে।

উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হবে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছিল সংসদ ভবনের সাবজেলে। এছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি এএইচএম এরশাদকে রাখা হয়েছিল নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ সেলে। যুগান্তর