প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

‘এভাবে চলতে থাকলে আমি কোর্ট চালাতে পারব না’

 

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিনেও আদালতে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বক্তব্যের সময় এ হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি এজলাস ছেড়ে চলে যেতে উদ্যত হলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

আজ বুধবার (৯ মে) সকাল সোয়া ৯টায় দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানির শুরুতেই বক্তব্য উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। এর পর একে একে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাওদুদ আহমদ শুনানি করেন। পরে বক্তব্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

সব শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুনানি শেষ হয়। তাঁর বক্তব্যের সময় আদালতে প্রচণ্ড হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে আদালত এজলাস ছেড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অবশ্য এর আগে জয়নুল আবেদীনের বক্তব্য উপস্থাপনের সময়ও কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনা দেখা দেয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বক্তব্যের বিষয়ে যুক্তি খণ্ডন করে বক্তব্য শুরু করেন। এ সময় তিনি মামলার জামিন শুনানি নিয়ে কথা না বলে আপিল শুনানি এবং মামলার মেরিটে গিয়ে কথা বলা শুরু করেন।

তখন সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, ‘মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করছেন।’

এ নিয়ে আদালত কক্ষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা হৈচৈ শুরু করেন। একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আসন ছেড়ে যেতে উদ্যত হন। তিনি বলতে থাকেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে আমি কোর্ট চালাতে পারব না।’

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে পেছন থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা চিৎকার করে সবাই বলতে থাকেন, ‘আপনি বসেন। আপনি বলতে পারেন না…।’

একপর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সব ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে আদালত কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন। প্রধান বিচারপতিও এজলাস ছেড়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হন। প্রায় পাঁচ মিনিট আদালতের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এ সময় ডায়াসে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানি করার জন্য অনুরোধ করেন। পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সহায়তায় পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে আসে।

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল আবার শুনানি শুরু করেন। দুপুর সোয়া ১টার দিকে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আপিলের রায়ের জন্য আগামী ১৫ মে দিন ধার্য করে কার্যক্রম মুলতবি করেন।