গাসিক নির্বাচনে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি চলছে

 

গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে তিনটি আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ মে) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চে এ শুনানি চলছে।

গাসিক নির্বাচন স্থগিত নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আবেদন করেছে।

আদালতে ইসির পক্ষে রয়েছেন মো. ওবায়দুর রহমান (মোস্তফা), হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে জয়নুল আবেদীন, জাহাঙ্গীরের পক্ষে এ এম আমিন উদ্দিন। আর রিটকারী সুরুজের পক্ষে রয়েছেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।

গত ৬ মে গাসিক নির্বাচন স্থগিতে রুলসহ একটি আদেশ দেয় হাইকোর্ট।

সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম আজহারুল ইসলাম সুরুজ একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।

সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্বাচন স্থগিত করার পাশাপাশি রুলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে শিমুলিয়ার ছয়টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত করা কেন বেআইনি হবে না- তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানতে চায়।

গত ৭ মে এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. হাসান উদ্দিন সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।

এ দুজনের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শুনানির জন্য বুধবার দিন ঠিক করে তবে ইসি আপিল আবেদন নিয়ে সময় চাওয়ায় একদিন পেছানো হয়।

এর আগে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) আবেদন করবে—এ তথ্য উপস্থাপনের পর এ বিষয়ে শুনানি একদিন পেছায় আপিল বিভাগ।

বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে।

ইসির আইনজীবী ওবায়দুর রহমান মোস্তফা আদালতকে জানায়, গাজীপুরের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল করবে। আপিল করার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে— আজই- (বুধবার) আপিল করা হবে।

গাসিক নির্বাচন স্থগিত নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের করা আবেদনের ওপর বুধবার আপিল বিভাগে শুনানি হওয়ার কথা ছিল।

সকালে ইসির পক্ষে আইনজীবী মো. ওবায়দুর রহমান (মোস্তফা) আদালতে জানায়, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আমরা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করবো এ দু’টি আবেদনের সঙ্গে আমাদের আবেদনটি একসঙ্গে শুনানি করলে ভালো হয়।

এর পর আদালত জানায়, বাকিরা করে ফেলেছে, আপনারা এতো দেরি করলেন কেন?

জবাবে আইনজীবী বলেন, গতকাল নির্বাচন কমিশন থেকে আদেশ পাওয়ার পর আজ আবেদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

এরপর আদালত ‘নট টুডে’ (আজকে নয়) আদেশ দেয়। এসময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন দাঁড়িয়ে আগের দু’টি আবেদনের শুনানি করার আরজি জানায়।

তখন আদালত জানায়, নির্বাচন ১৫ তারিখে (১৫ মে)। আগামীকাল- বৃহস্পতিবার কী হয় দেখেন।

এদিকে, গত রোববার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন স্থগিত করায় সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা।

হাইকোর্টের আদেশ মেনে নির্বাচন কমিশন রিটার্নিং অফিসারকে সেখানকার নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি। ওই দিন হাইকোর্ট একইসঙ্গে সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ছয়টি মৌজাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অর্ন্তভুক্ত করা গেজেট এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচন সংক্রান্ত তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।

তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট হওয়ার কথা ছিল।