হাইকোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার

 

রাজধানীর শিশু একাডেমিসংলগ্ন হাইকোর্টের গেটের সামনে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির খবর জানার জন্য ভিড় করছেন বিএনপির অনেক নেতা–কর্মী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৫ মে) সকাল আটটা থেকে গেটের সামনে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের একটি সাঁজোয়া যান, জলকামান ও পুলিশ পরিবহন গাড়ি রাখা হয়েছে সেখানে।

বিএনপির কয়েকজন নেতা–কর্মী বলেন, আজ খালেদা জিয়ার জামিন হলে তাঁরা আনন্দ মিছিল বের করবেন। জামিন না হলে বিক্ষোভ মিছিল বের করবেন।

পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুনানিকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টের প্রতিটি গেটের সামনে চারপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তাঁরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, ‘আমরা আশায় আছি, খালেদা জিয়া জেল থেকে মুক্তি পাবেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে তাঁকে এভাবে জেলে রাখা যায় না।’

সরেজমিনে দেখা যায়, সোয়া নয়টার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হাইকোর্টের গেটের কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের আদেশ জানা যাবে আজ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ আদেশ ঘোষণা করবেন।

এর আগে ৮ ও ৯ মে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে দুদক, রাষ্ট্রপক্ষ ও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। ৯ মে আপিল বিভাগ খালেদার জামিন বিষয়ে আজ আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

এ মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ডাদেশ দিয়ে রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। এরপর থেকে খালেদা জিয়া নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। রায়ের পর আপিল করে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া, যার ওপর শুনানি নিয়ে ১২ মার্চ হাইকোর্ট চারটি দিক বিবেচনায় তাঁকে চার মাসের জামিন দেন।

এই জামিন স্থগিত চেয়ে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক আবেদন করে। শুনানি নিয়ে ১৪ মার্চ আপিল বিভাগ ওই জামিন স্থগিত করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন। অন্যদিকে, স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা, যা সেদিন চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে। আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। পরে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। ১৯ মার্চ খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে শুনানির জন্য ৮ মে দিন রাখেন আপিল বিভাগ।

বিদেশ থেকে পাঠানো এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশে বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুদক এই মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশীদ। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আদালত খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ১০৯ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করেন।