ভারতের রূপান্তরকামী তৃতীয় বিচারক বিধান বরুয়া

রূপান্তরকামী-সমকামীদের নিয়ে নানা ভুল ধারণা তাঁর চারপাশে। তবু প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ে স্বীকৃতি আদায় করে নিলেন রূপান্তরকামী নারী বিধান বরুয়া ওরফে স্বাতী। শুক্রবার ভারতের আসামের লোক আদালতের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের জয়িতা মণ্ডল ও মহারাষ্ট্রের বিদ্যা কাম্বলের পরে তিনিই ভারতের তৃতীয় রূপান্তরকামী যিনি এই সম্মান অর্জন করলেন।

গুয়াহাটিতে কামরূপ মহানগর জেলা দায়রা আদালতে বসা জাতীয় লোক আদালতে কাজ সামলালেন বিধান। এর পরে হাসিমুখে গণমাধ্যমকে বললেন, হাতে আসা ২৫টি মামলাই পারষ্পরিক বোঝাপড়ার সমাধান করা গিয়েছে।

তবে তাঁর চলার পথটা এত সোজা ছিল না। ২০১২ সালে লিঙ্গ পরিবর্তনের আগে তাঁর পরিবারই বাধা দিয়েছিল। বিধান তখন বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে অস্ত্রোপচার করান। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাশ করেছেন। স্বাতী ওরফে বিধানের আজকের স্বীকৃতিতে অবশ্য আসাম জুড়ে হাজারো সমকামী, রূপান্তরকামীর জীবনের সমস্যা উবে যাবে না। রাজ্যে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে মাত্র ১৬ দিন বাকি। পরিচয় প্রমাণের টানাপড়েনে প্রায় ১৫ হাজার সমকামী, রূপান্তরকামীর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন লোকআদালতের এই নব্য বিচারক। এ বিষয়ে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন তিনি।

বিধান বলছিলেন, ‘‘আপাতত আমরা অন্তর্বতীকালীন স্থগিতাদেশ পেতে চাইছি। যাতে চূড়ান্ত খসড়া বেরনোর পরে কেউ বাদ পড়া রূপান্তরকামীদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে না দেয়।’’

এনআরসি সমন্বয়রক্ষাকারী আমলা প্রতীক হাজেলা অবশ্য জানান, সুপ্রিম কোর্টের ঠিক করে দেওয়া প্রমাণপত্রের সাপেক্ষেই এনআরসির কাজ চলছে। চূড়ান্ত খসড়া বেরনোর পর কারও অভিযোগ থাকলে উপযুক্ত প্রমাণপত্র-সহ তা জানাতে পরেন।

বিধানের ধারণা, রাজ্যে সচেতনতা গড়ে উঠলে রূপান্তরকামীদের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ হাজার হত। গত বছর গুয়াহাটি হাইকোর্টে রূপান্তরকামীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন বিধান। রাজ্য সরকার জানায়, রূপান্তরকামীদের সমস্যা খতিয়ে দেখে নীতি নির্ধারণের জন্য কমিটি গড়া হয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা