আন্দোলনের মুখে সব ধরনের স্যানিটারি প্যাডের ওপর থেকে ১২ শতাংশ কর বাতিল করেছে ভারত

ভারতে আন্দোলনের মুখে স্যানিটারি প্যাডের কর বাতিল

আন্দোলনের মুখে সব ধরনের স্যানিটারি প্যাডের ওপর থেকে ১২ শতাংশ কর বাতিল করেছে ভারত। কয়েক মাস ধরে এই কর বাতিলের জন্য দেশটিতে আন্দোলন চলছিল। খবর বিবিসির

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছর আগে ভারত সরকার মেয়েদের মাসিকের সময় ব্যবহৃত সব ধরনের স্যানিটারি প্যাডের ওপর ১২ শতাংশ কর আরোপ করে। সেখানে ব্র্যান্ডেড তুলার পট্টি ও স্যানিটারি প্যাডকে বিলাসী পণ্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। নতুন এই কর আরোপের আইন গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) নামে পরিচিত।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরই এ নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। এই কর বাতিল চেয়ে আদালতে সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পিটিশন কর্মসূচিও নেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি পিটিশনে চার লাখেরও বেশি মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে আন্দোলনকারীরা। এই কর্মসূচি ‘লহু কা লগন’ বা ‘রক্ত কর’ নামে পরিচিত ছিল।

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য ছিল, যে দেশের প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে চারজন নারী ও কিশোরীর স্যানিটারি প্যাড কেনার সামর্থ্য নেই, সেখানে এই করারোপ বিষয়টিকে আরও কঠিন করে তুলবে।

ভারতে বর্তমানে অর্থমন্ত্রীর পদে সাময়িক দায়িত্ব পালনকারী পীযূষ গয়াল কর প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেন। তিনি বলে, ‘সব মা ও বোন খুব খুশি হবেন যে স্যানিটারি প্যাড এখন শতভাগ করমুক্ত।’

মাসিকের সময় মেয়েদের স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা নিয়ে কাজ করে সাচ্চি সাহেলি। সরকারের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সুরভি সিং থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, এটা ছিল বহুল প্রত্যাশিত। মাসিকের সময় স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মেয়েদের স্কুলে ও কর্মক্ষেত্রে থাকতে সহায়তা করার জন্য এই পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল।

নিনে মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও এই আন্দোলনের কর্মী অমর তুসলিয়ান বলেন, এটি ভারতের সবার জন্য এক বড় বিজয়।

মাসিকের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সামর্থ্য কেবল ভারতের নারীদের নেই, এমন নয়; প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউকের তথ্য অনুসারে, ২১ বছরের কম বয়সী সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের স্যানিটারি পণ্য কেনার সামর্থ্য নেই। যুক্তরাজ্যেও এ ধরনের পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপ করা আছে। সেখানেও এটি বাতিলের দাবি উঠেছে।

ভারতে যেসব কারণে নারীরা স্কুল-কলেজ থেকে ঝরে পড়ে, তার মধ্যে অন্যতম হলো মাসিক। অনেকে স্যানিটারি পণ্যের অভাবে মাসিকের সময় বাড়ি থাকতে বাধ্য হয়। অনেক কিশোরী ও নারী এ সময় এক টুকরো কাপড় বা পুরোনো ন্যাকড়া ব্যবহার করে। যথাযথভাবে পরিষ্কার করা না গেলে এই কাপড় থেকে সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।