আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ফাইল ছবি)

‘মামলাজট নিরসনে জাস্টিস অডিট কার্যকর ভূমিকা পালন করবে’

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়নে এবং বিদ্যমান মামলাজট নিরসনে ন্যাশনাল জাস্টিস অডিট কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, দেশের বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই জানি। এর অনেক কারণ রয়েছে। যেগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা দরকার। ন্যাশনাল জাস্টিস অডিট এই কারণগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করবে এবং সরকারি নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার (২৯ জুলাই) বিকেলে ‘ন্যাশনাল জাস্টিস অডিট বাংলাদেশ’ এর ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। আইন মন্ত্রণালয় এবং জার্মান সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড যৌথভাবে এ ওয়েবসাইট নির্মাণ করে।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জাস্টিস অডিট’ শুধুমাত্র নীতি প্রণয়ন ও নীতিনির্ধারণেই নয়, বরং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন পরিমাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৬তম লক্ষ্য- ‘শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান’ অর্জনে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত প্রদান করবে, যা শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা প্রচলন এবং সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করতে পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।

‘জাস্টিস অডিট’ হলো ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়নের একটি পদ্ধতিগত নিরীক্ষণ ও সমীক্ষা। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিদ্যমান বিচারব্যবস্থার প্রকৃত অবস্থাকে দৃশ্যমান করে। ‘জাস্টিস অডিট’ একটি ওয়েবভিত্তিক তথ্যভাণ্ডার যা থেকে নীতিপ্রণেতাসহ বিচারব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষসমূহ তথ্য ও প্রমাণনির্ভর বিশ্লেষণ দেখতে পান এবং এর ভিত্তিতে বিচারব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন। এই প্রক্রিয়ায় বিচারব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। একইসঙ্গে নিয়মতান্ত্রিক জরিপের মাধ্যমে বিচার পরিষেবা প্রদানকারী, বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ জনগণের মতামত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং তালেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।

‘জাস্টিস অডিট’ বছরভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে মামলাজটসহ ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে। এটি কোনো বিশেষ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, ক্ষেত্র বা বিশেষ কোনো ব্যবস্থাকে দায়ী করে না এবং কোনো প্রতিষ্ঠান, ভৌগোলিক স্থান কিংবা জেলাকে ক্রমানুসারে বিন্যাস বা স্কোরিং করে না। ‘জাস্টিস অডিট’ কোনো এককালীন ঘটনার প্রতিবেদনও নয় বরং বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠার একটি চলমান কৌশল। ‘জাস্টিস অডিট’ কোনো ব্যক্তিগত তথ্য কিংবা সরকারের কোনো গোপনীয় তথ্য সংগ্রহ করে না।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতি যৌথভাবে ‘ন্যাশনাল জাস্টিস অডিট বাংলাদেশ’ এর ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির উপরাষ্ট্রদূত মিকায়েল এসচুলথেইস, যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সংস্থা ডিএফআইডির বাংলাদেশ প্রধান জেন অ্যাডমন্ডসন, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, জিআইজেডের রুল অব ল বিভাগের বাংলদেশ প্রধান প্রমিতা সেনগুপ্ত, যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ম্যাপিং সেন্টারের পরিচালক জোসেফ এরিক ক্যাডোরা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।