নতুন আইনজীবী হলেন ৫৩২৯ জন
বার এক্সাম (প্রতীকী ছবি)

বার কাউন্সিল পরীক্ষায় দীর্ঘসূত্রতা: উৎকণ্ঠায় সনদ প্রার্থীরা

আইনজীবীদের সনদ প্রদানকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে হাজার হাজার পরীক্ষার্থী উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। বছরে দুবার পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে পরীক্ষা হচ্ছে একবার। এতে সনদ প্রার্থীদের ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হচ্ছে।

অ্যাডভোকেট হিসেবে অন্তর্ভুক্তি পরীক্ষার (এনরোলমেন্ট) জন্য দীর্ঘ সময় ধরে হাজার হাজার শিক্ষার্থী অপেক্ষা করলেও পরীক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।

বার কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, আগে সাধারণত বছরে দুবার এনরোলমেন্ট পরীক্ষা নেয়া হতো। প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভা এই তিন ধাপের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর উত্তীর্ণদের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী এলএলবি পাস করার পর সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে বার কাউন্সিলের নির্ধারিত ফর্মে ইন্টিমেশন পেপার জমা দেন। এরপর শিক্ষানবিশ হিসেবে ৬ মাস অতিক্রম হলে বার কাউন্সিল শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রেশন ফরম দেয়। এনরোলমেন্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রাথমিক যোগ্যতা এই রেজিস্ট্রেশন। এরপর পরীক্ষার জন্য বার কাউন্সিল সময়সূচি ঘোষণা করলে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন করেন।

বার কাউন্সিলের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী ২০১৭ সালের ২১শে জুলাই ৩৪৫০০ শিক্ষার্থী নৈর্ব্যক্তিক (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় অংশপ্রহণ করেন। এদের মধ্যে এগারো হাজার ৮৪৬ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হন। ওই বছরেরই ১৪ই অক্টোবর কৃতকার্যরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। প্রায় আট মাস পর চলতি বছরের জুন মাসে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী ৮ হাজার ১৩০ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর থেকেই লিখিত পরীক্ষায় কৃতকার্য প্রার্থীরা ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিন মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করছে না বার কাউন্সিল। কবে নাগাদ মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচী নির্ধারণ করা হবে তার কোন নির্দেশনা না থাকায় হতাশায় ভুগছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।

এ নিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষানবিশ জানিয়েছেন, চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তারা। বার কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ ও বর্তমান প্রেক্ষাপটকে দায়ী করছেন তারা। তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান। আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত হওয়ার ক্ষেত্রে এ প্রতিষ্ঠান থেকেই সনদ নিতে হয়। হাইকোর্ট এবং জজকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রতিবছর নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে হয়। প্রতি ক্ষেত্রে সাধারনতঃ পরীক্ষার ছয়মাস পর ফলাফল প্রকাশ করে থাকে কৃর্তপক্ষ।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী বার কাউন্সিলের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্তির পরীক্ষা তিনটি ধাপে হয়ে থাকে। প্রথম ধাপে একজন শিক্ষার্থীকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিতে হয়। উত্তীর্ণরা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। লিখিত পরীক্ষায় কৃতকার্যরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। এরপর আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সনদপ্রাপ্ত হয়ে বৈধভাবে আত্মনিয়োগ করতে পারেন আইন পেশায়। যদিও এর আগে পর্যন্ত শিক্ষানবিশ হিসেবে কোর্টে পেশায় নিয়োজিত থেকে আইনচর্চা করা যায়, তবে আইনজীবী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ ও প্রচার করা যায় না।