সুপ্রিম কোর্টে সাবেক বিচারপতি আবদুল আজিজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী মো. আবদুল আজিজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) বাদ জোহর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সামনের চত্বরে এই জানাজা হয়।

পারিবারিক সূত্র জানায়, আগামী শনিবার বেলা ১০টায় আবার জানাজা শেষে উত্তরায় ১২ সেক্টরের কবরস্থানে দাফন করা হবে। আবদুল আজিজের এক ছেলে আমেরিকা ও এক মেয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। তারা দেশে ফিরার পর মরদেহ দাফন করা হবে। এরপর রোববার মরহুমের কুলখানি হবে।

বিচারতি মো. আবদুল আজিজ গতকাল বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি……রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

বার্ধক্যজনিত কারণ ছাড়াও বিভিন্ন রোগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মরহুম বিচারকের ছোট মেয়ের জামাতা ক্যাপ্টেন ফখরুদ্দিন। তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি এবং বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মরহুমের প্রথম জানাজায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ সিনিয়র-জুনিয়র আইনজীবীরা শরিক হন। সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্হাব মিয়াও অংশ নেন।

বিচারপতি আবদুল আজিজ ১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন যশোর জেলার বর্তমান ঝিনাইদহ জেলার কোর্ট চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কোর্ট চাঁদপুর ইংলিশ স্কুল থেকে ১৯৫৮ সালে ম্যাট্টিকুলেশন পাস করেন। এরপর পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে আইএ, যশোরের মাইকেল মধুসূদন কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৬৬ সালের যশোর বারে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানি হাইকোর্টে আইনজীবী হন। সনদ পাওয়ার পর থেকেই সুপ্রিম কোর্টের আইনপেশা শুরু করেন। ১৯৮৩ সালে আবদুল আজিজ আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

১৯৯৮ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০০০ সাল পর্যন্ত বিচারপতি ছিলেন। ২০০০ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হন। এরপর বিচারপতি আবদুল আজিজ ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ পান এবং একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান।

তিনি প্রয়াত আইনজীবী মির্জা গোলাম হাফিজের জুনিয়র ছিলেন এবং ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিবাদী (আসামি)পক্ষের আইনজীবী ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বিচারক হিসেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে প্রতিনিধিত্ব করেন। জাপানের টোকিও এবং থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ল এশিয়ায় কনফারেন্সে যোগদান করেন। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড, ভারত, ম্যালয়েশিয়া ও নেপালে ভ্রমণ করেন। জাগোনিউজ