সকল ধর্মের মিলিত সংস্কৃতিই বাঙালি সংস্কৃতি : প্রধান বিচারপতি

সকল ধর্মের মিলিত সংস্কৃতিই বাঙালি সংস্কৃতি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তাই সুদীর্ঘকালের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান এ ঐতিহ্য সকলকে ধারণ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আবহমান কাল থেকে বাংলার প্রকৃতি বিভিন্ন রঙে রঙিন হয়েছে। কালের আবর্তনে প্রতিবছর শরৎকালে শারদীয় দুর্গাপূজা এ দেশে উদযাপিত হয়ে আসছে। শরতের কাশফুলের শুভ্রতা ও ঢাকের আওয়াজ বাঙালির সার্বজনীন উৎসবকে মহিমান্বিত করে তোলে। মহিষাসুর বধের জন্য দুর্গাদেবী আবির্ভূত হয়ে তাকে দমন করে এবং শান্তি ও ধর্মের পুনঃস্থাপন করে। ভালো এবং মন্দের সংগ্রাম চিরকালই থাকবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, দুর্গাপূজা মূলত বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসব কেবল ধর্মীয় গুরুত্বই বহন করে না, সামাজিক সাংস্কৃতিক দিক থেকেও এর তাৎপর্য অপরিসীম। এটি এখন শুধু একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলে আনন্দ-উৎসবে সামিল হওয়ার মাধ্যমে এটি সার্বজনীনতা লাভ করেছে। এটি হয়েছে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির সেতুবন্ধনকে সুদৃঢ় করার এক অনন্য সামাজিক উৎসব।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বলেন, ধর্ম আমাদের শিক্ষা দেয় উদারতা, মানবিকতাবোধ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং সহিষ্ণুতা। সব ধর্মের মিলিত সংস্কৃতিই আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি। সুদীর্ঘকালের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান এ ঐতিহ্য আমাদের সবাইকে ধারণ করতে হবে। একইসাথে আমাদেরকে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে, যেন সকল সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা, উগ্রতা পরিহার করে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা সমাজ ও দেশকে গড়ে তুলতে পারি এবং দেশকে বিশ্বসভায় গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠা করতে পারি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বিজয়া পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মিন্টু কুমার মণ্ডলের সঞ্চলনায় এবং আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক ড. নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস, অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্তী এবং আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বিজয়া পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ষষ্টী সরকার প্রমুখ।