গ্রেফতার (ছবি - প্রতীকী)
গ্রেফতার (ছবি - প্রতীকী)

স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী গ্রেপ্তার

স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দেবজ্যোতি বর্মণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার

প্রতিবেদনে বলা হয়, কালীপুজোর রাতে নিউ আলিপুর থানার সাহাপুরের জে ব্লকে শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল গৃহবধূ অর্পিতা বর্মণের ঝুলন্ত দেহ। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হলেন তাঁর আইনজীবী স্বামী। ধৃতের নাম দেবজ্যোতি বর্মণ।

গত বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) বাঁশদ্রোণীতে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিউ আলিপুর থানার পুলিশ। শুক্রবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে ধৃতকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রের খবর, দীপাবলির দিন অর্পিতার দাদা দেবজ্যোতির বিরুদ্ধে বোনকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত। অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই ফেরার ছিলেন দেবজ্যোতি। ওই দম্পতির দুই সন্তান। ঘটনার রাতে এক সন্তানকে নিয়ে ছাদে বাজি ফাটাচ্ছিলেন দেবজ্যোতি। অর্পিতা ঘরে ছিলেন। পুলিশের কাছে অভিযুক্ত দাবি করেছেন, বাজি পোড়ানোর জন্য স্ত্রী না আসায় তিনি ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখেন, অর্পিতার ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ধাক্কা দিয়েও না খোলায় এক ছুতোর মিস্ত্রিকে ডাকেন দেবজ্যোতি। দরজার ছিটকিনি খুলে দেখা যায় অর্পিতার ঝুলন্ত দেহ। দেবজ্যোতি আরও দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রী কয়েক বছর ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। সেই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন অর্পিতার পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, অর্পিতাকে মানসিক নির্যাতন করতেন দেবজ্যোতি।

প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অর্পিতাকে খুনের প্রমাণ এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তবে তাঁর ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, তাতে লেখা রয়েছে, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বিছানার নীচে একটি বেনারসি শাড়ি রয়েছে। তা যেন মৃতদেহের উপরে বিছিয়ে দেওয়া হয়।

শুক্রবার দেবজ্যোতিকে আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে পেশ করা হয়। অর্পিতার তরফে আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তের দু’টি বাড়ি রয়েছে। একটি মালদহে, অন্যটি নিউ আলিপুরে। সে ক্ষেত্রে অর্পিতার সব গয়না-সহ নানা জিনিসের খোঁজ করার প্রয়োজন আছে। তাই অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজত দেওয়া হোক। সরকারি আইনজীবীও তদন্তের স্বার্থে পুলিশি হেফাজতের আবেদন করেন।

দেবজ্যোতির আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুইসাইড নোটের তথ্য অনুযায়ী ঘটনাটি খুন নয়, আত্মহত্যা। তাই অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করা হোক।’’

ভারপ্রাপ্ত বিচারক কণিকা রায় শুনানি শেষে অভিযুক্তের আট দিনের পুলিশি হেফাজত দেন।