রিজার্ভ চুরি: যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বাংলাদেশের মামলা

রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত আনতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।এ মামলায় ফিলিপাইনের ম্যানিলাভিত্তিক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) আসামি করা হয়েছে।

গতকল বৃহস্পতিবার মামলা করার কথা থাকলেও আইনি প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় আজ শুক্রবার এ মামলা করা হয়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করা হয়েছে।’

এর আগে গত বুধবার মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরও সাংবাদিকদের মামলা করার কথা জানিয়েছিলেন। ফজলে কবির বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করা এই মামলার উদ্দেশ্য।’

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (নিউইয়র্ক ফেড) থাকা বাংলাদেশের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং লেনদেনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে এই অর্থ ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে সরানো হয়েছিল। এই অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার আটকানো গেলেও ফিলিপাইনে চলে যায় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। এর মধ্যে এখনো ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফেরত আসেনি।

এই অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করা হয়েছে। এজন্য দেশটিতে দুটি ল’ফার্মকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের ফি নিয়ে একটি চুক্তিও করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, চুরি যাওয়া ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধার করে দিতে পারলে ল’ফার্ম দুটিকে সেই অর্থের ১০ ভাগ দেওয়া হবে।

জানা যায়, হ্যাকাররা চুরির অর্থ ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখার চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। সেখান থেকে ওই অর্থ ফিলিপাইনের মুদ্রা পেসোতে রূপান্তরের পর দুটি ক্যাসিনোতে পাঠানো হয়।

রিজার্ভ চুরির এই ঘটনায় দোষী প্রমাণ হওয়ায় গত ১০ জানুয়ারি আরসিবিসির সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে সাজা দেন ফিলিপাইনের আদালত। এ ছাড়া তাকে সর্বমোট ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়।