প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (ফাইল ছবি)

অধিকাংশ নারী বিচারক তাদের দায়িত্ব পালনে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন: প্রধান বিচারপতি

অধিকাংশ নারী বিচারক তাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ঠ দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের ২৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় গতকাল শুক্রবার নারী দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এসময় সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘জনজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। দেশের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট সবসময়ই নারী-পুরুষের সমতা ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারীর সমান অংশগ্রহণের নীতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নারীর সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর সাফল্য ও অগ্রগতি ইতিবাচক। পোশাক শিল্পে এদেশে নারীদের ভূমিকা সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত। এই শিল্প থেকে বৈদেশিক আয়ের সিংহভাগ অর্জন করা হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নারী অধিকার রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং অধিকাংশ নারী বিচারক তাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ঠ দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সংবিধানে নারী অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের কর্মে ও পেশায় সমতা বিধানের কথা সন্নিবেশ করা আছে। ১৯৭৪ সালে প্রথম বিচার বিভাগে নারী বিচারক নিয়োগের বাধা বিলুপ্ত করা হয়। শুরু হয় অধস্তন আদালতে নারী বিচারকদের পথচলা। সরকার ২০০১ সালে হাইকোর্টে এবং ২০১১ সালে আপিল বিভাগে সর্বপ্রথম নারী বিচারপতি নিয়োগ দেয়।

তাছাড়া, ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণের সমতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণেই বিচার বিভাগে নারীদের অংশগ্রহণ অন্যান্য পেশার মতই লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে ৫৩ জন নারী বিচার বিভাগে যোগদানের পর বর্তমানে মোট বিচারকের প্রায় সাড়ে ২৭ শতাংশই নারী বিচারক রয়েছেন। এই সংখ্যা ইউরোপ, আমেরিকা বা আমাদের প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বেশি।’ শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য এবং সিনিয়র জেলা জজ তানজীনা ইসমাইলের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি জিনাত আরা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ, বিচারপতি ফাতেমা নজীব প্রমুখ।