ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ‘হিজড়া লিঙ্গ’

এবারের ভোটার তালিকার হালনাগাদে হিজড়া সম্প্রদায় ‘হিজড়া লিঙ্গ’ (Hijra) হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ পাচ্ছে। এ জন্য ভোটার নিবন্ধন ফরমের (ফরম-২) প্রয়োজনীয় সংশোধনী চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় হিজড়া লিঙ্গও বিবেচনায় নেওয়া হবে। চাইলে হিজড়ারা স্বেচ্ছায় পুরুষ বা নারী হিসেবেও ভোটার তালিকায় নাম লেখাতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, গতকাল সোমবারের (৮ এপ্রিল) কমিশন সভায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের আলোচনায় হিজড়াদের প্রসঙ্গ ওঠে। এ ছাড়া বৈঠকের কার্যপত্রেও হিড়জাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ইসি যেসব কার্যক্রম শুরু করেছে তাও তুলে ধরা হয়।

এর আগে গত বছরে ১০ জুলাই নির্বাচন কমিশনের ৩২তম সভায় ভোটার তালিকায় হিজড়া জনগোষ্ঠীর ‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে গত বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করায় তা বাস্তবায়ন করা যায়নি এ ছাড়া ওই সময় ভোটার নিবন্ধন ফরম-২-এর সাব ফিল্ড তৈরি করাও ছিল না।

জানা গেছে, পুরুষ ও নারীর পাশাপাশি ফরমে হিজড়া লিঙ্গ যুক্ত করে ফরমের সংশোধনীর বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি এরই মধ্যে পাওয়া গেছে। শিগগিরই এই সংশোধনী ফরম ছাপিয়ে সারাদেশে পাঠানো হবে। এ ছাড়া ইসির ডেটাবেইজের সফটওয়ার সংশোধন করে এরই মধ্যে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘এবারের হালনাগাদে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে হিজড়া সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। এ জন্য আমরা ফরমে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ঘরও রাখছি। তবে কোনও হিজড়া যদি নারী ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন, সে ক্ষেত্রে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আবার কেউ পুরুষ সাজতে চাইলেও পারবেন। এটা তাদের ইচ্ছাধীন। তারা যেভাবে চাইবেন, সেটাই হবে।’

প্রসঙ্গত, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম তাদের তথ্য এ সময় সংগ্রহ করা হবে। এরপর ২৫ মে থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নিবন্ধন কেন্দ্রে ভোটারদের বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হবে। এবার বায়োমেট্রিক হিসেবে ১০ আঙুলের ছাপ ও আইরিশ নেওয়া হবে। যাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে তাদের মধ্যে ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হবে তারাই নতুন ভোটার হিসেবে যুক্ত হবেন।

জানা গেছে, এবার ৮০ লাখ নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে ইসি। এ কাজে ৬০ হাজারের বেশি জনবল যুক্ত হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদে ৯২ কোটি ৮৭ লাখ টাকার বাজেট ধরা হয়েছে।