ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট
ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট (ছবি: পুরনো)

আদালতে সম্রাট

ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় এনে রাখা হয়।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় দায়ের করা মাদক ও অস্ত্র মামলার রিমান্ড শুনানি হবে। আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর অস্ত্র আইনের মামলায় সম্রাটকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। একই দিনে মাদক আইনের মামলায় সম্রাটকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন একই থানার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মাহফুজুল হক ভূঞা। ওই দিন (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরা শুনানির জন্য ৯ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

কিন্তু ৯ অক্টোবর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি থাকায় সম্রাটকে আদালতে হাজির করা হয়নি। ফলে বিচারক শুনানির জন্য আজ সোমবার (১৫ অক্টোবর) এ দিন ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর (সোমবার) সম্রাটের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। উভয় মামলার এজাহারে বলা হয়েছে—মতিঝিল, আরামবাগ, ফকিরাপুল ও পল্টনসহ রাজধানীতে ১০টি ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা ছিল সম্রাটের। সবার কাছে সে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি, দলীয় পদের অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করতো। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করতো তার ক্যাডাররা। সম্রাটের কার্যালয় থেকে র‌্যাব অবৈধ অস্ত্র, মাদকসহ নির্যাতন করার জন্য ইলেকট্রিক শকড দেওয়ার মেশিন উদ্ধার করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশ ও র‌্যাব সূত্র জানায়, সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় দায়ের করা দুটি মামলারই বাদী র‌্যাবের নায়েব সুবেদার (ডিএডি) আব্দুল খালেক। মাদক মামলায় সম্রাটের পাশাপাশি তার সঙ্গে আটক আরমানকেও আসামি করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মামলা হয়েছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও গুরুত্ব দিয়ে মামলা দুটি তদন্ত করা হবে।’

আদালত চত্বরে সম্রাটের সমর্থকরা
রায়সাহেব বাজার থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের গেট পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছেন যুবলীগের সমর্থকরা। তারা সম্রাটের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেখা যায়, যুবলীগ সমর্থকদের সরিয়ে দিচ্ছে ডিবি ও পুলিশ। তবে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আদালত প্রাঙ্গণ।

এদিকে, ক্যাসিনো সম্রাট খ্যাত যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের দাবির পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরান ঢাকার সিএমএম আদালত চত্বর। আজ সম্রাটকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে ‘ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট মুক্তি পরিষদের’ ব্যানারে পুরা আদালত চত্বর পোস্টারে ছেয়ে ফেলা হয়েছে।

পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘সম্রাটের হাতে হাতকড়া রাজনীতিবিদরা চরম লজ্জিত’। ‘সম্রাট খুবই অসুস্থ মানবতার জননী তাকে বাঁচান।’

উল্লেখ্য, বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাবের আড়ালে ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোর অভিযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। এর দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ নেতা জিকে শামীমকে। অভিযানের প্রথম দিন থেকেই আলোচনায় আসে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের নাম। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অন্যদের সঙ্গে সম্রাটেরও দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। গত ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।