নাটোরে নদী থেকে বালু উত্তোলন, সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
আদালত

সাত শর্তে মাদক মামলায় দোষী সব্যস্ত দুই আসামি প্রবেশনে

মাগুরায় দুই আসামির বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও কারাগারে যেতে হচ্ছে না তাদের। কারাদণ্ডের বদলে বাড়ি থেকে গাছ লাগানোসহ আদালতের দেওয়া সাতটি শর্ত মেনে চলতে হবে।

মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. বুলবুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) ব্যতিক্রমী এই রায় দেন।

প্রবেশন পাওয়া দুই ব্যক্তি হলেন মাগুরা পৌর এলাকার বাসিন্দা বাহরুল মল্লিক (৫৫) ও আরিফ আহম্মেদ (৩৫)।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট গাঁজা সেবনরত অবস্থায় ওই দুজনকে আটক করে পুলিশ। মাগুরা সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তখন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অলিয়ার রহমান।

আসামিরা এত দিন জামিনে মুক্ত ছিলেন। মামলার সাক্ষ্য–প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৬ ধারার অধীনে অপরাধের শাস্তি কারাবাসের পরিবর্তে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে তাঁদের এক বছর সময়কালের জন্য সাতটি শর্তে প্রবেশন মঞ্জুর করেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বাবলু জানান, প্রবেশনের সময়ে আসামিরা প্রবেশনের কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে বা তাঁর আচরণ সন্তোষজনক না হলে তাঁর প্রবেশন আদেশ বাতিল করবেন আদালত। এ ছাড়া অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডাদেশ তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে আসামিদের।

এ ছাড়া অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডাদেশ তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে আসামিদের। আর এই সময়ে প্রবেশন কর্মকর্তা প্রতি তিন মাস পরপর শর্ত প্রতিপালন ও অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে বলেও জানান আইনজীবী শফিকুল ইসলাম।

শর্তগুলো হলো—

  • প্রবেশনের সময় দোষী সাব্যস্ত আসামি কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত হবেন না।
  • সর্বত্র শান্তি বজায় রাখবেন।
  • সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন।
  • আদালত ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন।
  • কোনোরূপ মাদক বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করবেন না।
  • কোনো খারাপ সঙ্গীর সঙ্গে আর মিশবেন না।
  • প্রবেশনের সময়ে আসামি পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হিসেবে ৫টি বনজ, ৫টি ফলদসহ মোট ১০টি গাছ লাগাবেন।

আসামি আরিফ আহম্মেদের আইনজীবী সজীব আহম্মেদ বলেন, এ ধরনের রায় আসামিদের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনে। এর মাধ্যমে নিজেদের শুধরে নিতে পারবেন তাঁরা।

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে মাদকের ও পারিবারিক বিরোধের দুটি মামলায় অনুরূপ রায় দিয়েছিলেন মাগুরার অন্য দুটি আদালত।

গত ২ মার্চ পারিবারিক বিরোধের একটি মামলায় একজনকে ও ৯ মার্চ মাদক সেবনের মামলায় নয়জন যুবককে প্রবেশন দিয়েছিলেন মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক মোস্তফা পারভেজ।

মামলা দুটিতে প্রবেশনের সময়কালে আসামিদের গাছ লাগানো, মুক্তিযুদ্ধের বই পড়া, মুক্তিযুদ্ধের ছবি দেখানোসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রবেশনকালে আচরণ সন্তোষজনক হওয়ায় পারিবারিক বিরোধের মামলায় প্রবেশন পাওয়া যুবককে মেয়াদ শেষের আগেই গত ১ নভেম্বর মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।