অপরাধীদের এমন শাস্তি দেব যেন ভবিষ্যতে কেউ আর সাহস না পায়: প্রধানমন্ত্রী

কুমিল্লার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। যে জড়িত সে যে ধর্মেরই হোক না কেন খুঁজে বের করা হবে। অপরাধীদের এমন শাস্তি দেব যেন ভবিষ্যতে কেউ এ রকম করতে আর সাহস না পায়।

১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আয়োজিত পূজার শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু মানুষ ধর্মান্ধ বলে তারা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। এটি শুধু মুসলমানদের মধ্যে নয়, সব ধর্মের মধ্যেই এ ধর্মান্ধতা রয়েছে। মাঝে মধ্যে কিছু দুষ্টচক্র নানা ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের ভেতরের অসাম্প্রদায়িক চেতনা নষ্ট করতে চায়। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটেছে তা ব্যাপকভাবে তদন্ত হচ্ছে। অনেক তথ্য আমরা পাচ্ছি। এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটাবে তাদের খুঁজে বের করবই। এখন প্রযুক্তির যুগ, খুঁজে বের করা যাবে এবং সে যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, কিছু মানুষের মধ্যে এ দুষ্ট বুদ্ধিটা আছে- যখন একটা জিনিস সুন্দরভাবে চলছে তখন সেটাকে নষ্ট করা। যারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে না, বিশ্বাস অর্জন করতে পারে না, যাদের রাজনীতি নেই, আদর্শ নেই আসলে তারাই এ কাজগুলো করে।

স্বাধীনভাবে ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করবেন কেন? সংখ্যালঘু ভাববেন না। এ মাটিতে আপনাদের জন্ম। আপনারা সংখ্যালঘু, অন্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এ রকম ভাববেন না। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে থাকবেন। সেই আত্মবিশ্বাসটা আপনাদের মধ্যে থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন, ‘এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আপনারা সুখে বাস করবেন, পাশাপাশি বাস করবেন, ভাই-ভাই হিসেবে বাস করবেন। কোনোমতে যেন সাম্প্রদায়িকতা বাংলার মাটিতে আর না আসে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িক উত্থান ঘটেছে। সংবিধান ক্ষতবিক্ষত করে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা যেভাবে ছিলাম সেভাবেই আছি। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হাতে দেশে ধর্মের নামে বিভেদ-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি। সংখ্যালঘু নির্যাতন। আওয়ামী লীগ জনমানুষের দল। আমরা সব সময় আপনাদের পাশে ছিলাম, থাকব।

অনুষ্ঠানে মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মণ্ডল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, আমাদের লোকেরা ভালো নেই, তারা ভীত।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ।