পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রী প্রদানের ক্ষেত্রে জালিয়াতি বন্ধে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসাথে পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভ (থিসিস) সংরক্ষণ ও অনুমোদনে কি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় সেটিও জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও পিএইচডি গবেষণার অভিসন্দর্ভের স্বকীয়তা যাচাইয়ে বা প্ল্যাগারিজম রোধে কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় কি না, তাও জানাতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিটের ওপর জারি করা রুল শুনানিতে আজ সোমবার (২২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারি আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কালিপদ মৃধা।
আদেশের বিষয়টি অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এসব বিষয়ে আদালতকে অবহিত করতে আগামী বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত। ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানাতে হবে।
রিটের প্রেক্ষাপট
গতবছর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) মাধ্যমে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে একই বছরের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন।
হাইকোর্টের রুল
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রী প্রদানের ক্ষেত্রে জালিয়াতি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
পাশপাশি পিএইচডি ডিগ্রী প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র (এনওসি) নেওয়ার বিধান করার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তাও রুলে জানতে চেয়েছেন আদালত।
২০২০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি এ কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
তিন মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া জালিয়াতি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষকের পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনের বিষয়ে ঢাবি ভিসির (উপাচার্য) ব্যাখ্যা তলব করেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশ বাস্তবায়ন না করায় আজ আদালত সময় বর্ধিত করে এ আদেশ দেন।