বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

বিচারক কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিলেন আপিল বিভাগ

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনাল-৭ এর প্রত্যাহার হওয়া বিচারক মোছা: কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে (seize) নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে তিনি আর ফৌজদারি মামলায় বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না।

আজ সোমবার (২২ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ আদেশ দিয়েছেন।

আদেশের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান। তিনি জানান, আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলার (রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার) শুনানি শেষে তাঁর বিচারিক ক্ষমতা সিজ (seize) করা হয়েছে। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে।

এর আগে, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার পরও ধর্ষণ মামলার এক আসামিকে জামিন দেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তাঁকে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আপিল বিভাগে হাজির হন বিচারক কামরুন্নাহার।

এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে তার বিষয়ে রুদ্ধদ্বার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বিচারকক্ষ থেকে বেঞ্চ অফিসার, আইনজীবীসহ সকলকে বের করে দেয়া হয়। এমনকি ভার্চুয়াল কোর্টের জুম আইডিও পরিবর্তন করে দেয়া হয়। থাকতে দেওয়া হয়নি কোন গণমাধ্যম কর্মীকেও।

আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে ক্ষমা চেয়েছেন বিচারক কামরুন্নাহার

যে মামলার জন্য বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হল

এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলার সাবেক প্রোগ্রাম প্রডিউসার আসলাম শিকদারের বিরুদ্ধে মামলা হয়। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা করা হয়। ওইদিনই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর ২০১৯ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৫ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আসলামের জামিন স্থগিত করেন।

চেম্বার আদালতে জামিন স্থগিত থাকার পরও গত বছরের ২ মার্চ আসামি আসলামকে জামিন দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক কামরুন্নাহার। এরপর ১২ মার্চ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বিচারক কামরুন্নাহারকে তলব করেন আপিল বিভাগ।

উল্লেখ্য, ১১ নভেম্বর রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করেন তিনি। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক পুলিশের উদ্দেশে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নিতে ‘পরামর্শ’ দেন। তাঁর দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ প্রেক্ষিতে তাঁর বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়।