কেউ কি চাইছেন, বিচার বিভাগের সাথে আইনজীবীদের দূরত্ব বৃদ্ধি হোক?
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নার জন্মদিন আজ

নাম জহিরুল ইসলাম খান পান্না। তবে জেড আই খান পান্না নামেই পরিচিত সবার কাছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এবং আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বারবার নির্বাচিত সদস্য। আইনজীবী তথা সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় সম্মুখ সারির একজন আইনজীবী হিসেবে খ্যাত। দেশের অন্যতম মানবাধিকার সংগঠন ‘ব্লাস্ট’ এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এবং দায়িত্ব পালন করছেন ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এর মতো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপার্সনের। আইন পেশায় চার দশকের বেশি সময় অতিবাহিত করা জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবীর জন্মদিন আজ। ১৯৪৮ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

পড়াশোনা ও রাজনীতি

জেড আই খান পান্নার রাজনীতি শুরু ছাত্রলীগ দিয়ে। স্বাধীনতার আগে আইন পড়তে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের করাচী। এলএলবি প্রথম বর্ষ পাশ করেছেন। পরিবার থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য লন্ডনে পাঠানোর; সেটা বুঝতে পেরে পড়া শেষ না করেই করাচী থেকে ফিরে আসেন। কারণ রাজনীতিই ছিল তাঁর ধ্যান জ্ঞান। ছোট বেলা থেকেই রাজনৈতিক পরিবেশে বেড়ে উঠা সন্তান এমনই হবার কথা। দাদা খান বাহাদুর হাশেম আলী খান। ছিলেন অবিবক্ত বাংলার প্রথম সংসদের এমএলএ এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের মন্ত্রীসভার কৃষি ও সমবায় বিষয়ক মন্ত্রী। বরিশালে তাদের বাড়িতে সবসময় ছিল রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা। মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ বসু সহ তৎকালীন সকল নেতাদের গমনাগম ছিল তাদের বাড়ি। আর জেড আই খান পান্না ছোট বেলা থেকেই দাদার সন্নিকটে থাকতেন। সেইভাবে তাঁর মধ্যে রাজনৈতিক চেতনা খুব প্রভাব ফেলে। ৭০ এর নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। ঘটনাচক্রে হয়ে উঠেনি। ব্যারিস্টারি পড়তে বিলেত যাওয়াও হয়নি তাঁর। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি শেষ পর্ব পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলেন।

আইন পেশায় মনোনিবেশ ও সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর

১৯৮০ সালের ৩০ মে আইন পেশায় প্রবেশ করেন। হাইকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন ৮৫ সাল থেকে। তারপর আস্তে আস্তে পেশাজীবী রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তাঁর বিশ্বাস, ভালবাসার প্রিয় দলটি ক্রমশই পুঁজিবাদের দিকে ধাবিত হয়ে যাচ্ছে মনে করে নিজেকে জাতীয় রাজনীতি গুঁটিয়ে নেন। এরপর নিজের নেতৃত্ব জাগিয়ে রাখেন নিজ পেশার সদস্যদের মাঝে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন আইনজীবীদের প্রিয় অভিভাবক। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চারবারের নির্বাচিত সদস্য।

কারাবরণ

অন্যায়ের বিরুদ্ধে বরাবরই প্রতিবাদী ছিলেন এই মানুষটি। ৭৫ পরবর্তীতে জেল খেটেছেন একটানা ২৭ মাস। তাঁর বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়। রাজনৈতিক মিথ্যে মামলা সবই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণেই এইসব মামলা।

প্রিয় শখ

একাত্তরের অসীম সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা, সদালাপী সাদা মনের এই মানুষটির শখ- বই পড়া, গান শোনা। আর নেশা- চা খাওয়া।