রাজধানীর বনানীতে সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা গাড়ি চাপায় পা হারানোর ঘটনায় কার দোষ, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
আজ রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সংস্থার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার এ কথা বলেন।
সার্জেন্ট মহুয়ার করা মামলায় আসামির নাম না দেওয়ার বিষয়ে ডিবি প্রধান বলেন, পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বিষয়টি আমিও জানি। এ ঘটনায় আমাদের গুলশান বিভাগের বনানী থানায় একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। মামলায় নাম না দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারও দোষ থাকলে সেটি খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ পর্যায়ে সিসিটিভি ফুটেজ ও মামলার বাদী তার অভিযোগে আসামির নাম উল্লেখ করার পরও অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মামলা নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চান। জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া আমাদেরই একজন সদস্য। যেহেতু মামলা হয়েছে তাই সাধারণ মানুষ যেভাবে বিচার পান, তার বিষয়টি সেভাবে দেখা হবে। তার মামলার বিষয়ে গুলশান বিভাগ কাজ করেছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে মহুয়ার পাশে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তার পাশে অবশ্যই আছি। সে তো আমাদেরই লোক। তবে আইনের স্পিরিটে যা হয়, সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনের চোখে যেটা হওয়ার সেটাই হবে।
গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কে একটি দ্রুতগতির গাড়ির চাপায় আহত হন সার্জেন্ট মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জন হাজং। তাকে উদ্ধার করে শ্যামলীর পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুরুতর অবস্থার কারণে অস্ত্রোপচার করে তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। আহত মনোরঞ্জন হাজং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার। তার মেয়ে মহুয়া হাজং ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে ডিএমপিতে কর্মরত।
দুর্ঘটনার পর তিনি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি। এমনকি ঘটনার পর পথচারীরা চাপা দেওয়া সেই গাড়ি ও চালকসহ অন্য যাত্রীদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও তারা ছাড়া পেয়ে যান। পরে অবশ্য মামলা নেয় পুলিশ।
নির্দোষ দাবি করে বিচারপতির ছেলের জিডি
অন্যদিকে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে একই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিচারপতির ছেলে অভিযুক্ত সাঈদ হাসান। জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, তার গাড়িটি মনোরঞ্জনের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়নি। বরং তার গাড়িতে বেআইনিভাবে উল্টো দিক থেকে এসে মনোরঞ্জনই ধাক্কা দেন। এতে তিনি ও তার স্ত্রীর প্রাণহানির মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিল। উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য এ দুর্ঘটনার দায়-দায়িত্ব মনোরঞ্জনের ওপরই বর্তায়।
দুর্ঘটনায় পা হারানো মনোরঞ্জন হাজংকে আসামি করে মামলা দেওয়া উচিত বলেও জিডিতে লিখেছেন তিনি। দুর্ঘটনার পর আহত মনোরঞ্জনকে পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন সাঈদ হাসান।