দুই আইনজীবীর রিমান্ড: অধস্তন আদালতের নথি তলব করলেন হাইকোর্ট
বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

বহুবিবাহের বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কেন নয়: হাইকোর্ট

একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমান অধিকার নিশ্চিত না করে বহুবিবাহের আইনি প্রক্রিয়া সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আজ বুধবার (৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

পাশাপাশি বহুবিবাহের নীতিমালা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আইন সচিব ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল ও অ্যাডভোকেট তানজিলা রহমান।

এর আগে বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। রিটে বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণার আবেদন জানানো হয়েছে।

রিটে আইন সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়।

আবেদনে যা বলা হয়

ইসলাম ধর্মে এক স্ত্রী থাকা অবস্থায় পুরুষের একাধিক বিয়ে করার বিধান রয়েছে। একসঙ্গে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি থাকলেও পবিত্র কুরআনে সব স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারায় বহুবিবাহের যে বিধান করা হয়েছিল তাতে সব স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত। যদিও স্বামীর বহুবিবাহের ফলে বর্তমান স্ত্রীর ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা বেশি। এরপরও সালিশি কাউন্সিলকে অনুমতি দেওয়ার সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা বর্তমান স্ত্রীর সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।

আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, মুসলিম পারিবারিক আইনের বিষয়ে পারিবারিক আদালত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখানে বহুবিবাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেবল সালিশি কাউন্সিলের হাতে দেওয়া হয়েছে, যা নারীর মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।

তিনি আরও বলেন, উন্নত মুসলিম দেশে বহুবিবাহের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, আর্থিক সক্ষমতার সনদ ইত্যাদি দাখিল করে বর্তমান স্ত্রীর বক্তব্য শুনানি করে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। আমাদের দেশে সালিশি কাউন্সিলের সাক্ষ্য-প্রমাণ নেওয়ার আইনগত সুযোগ নেই। বহুবিবাহের বর্তমান যে বিধান রয়েছে তা সংশোধন করে আরও কঠোর বিধান করা উচিত। এজন্য এই রিট দায়ের করা হয়।