হাইকোর্ট এবং চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী (ইনসেটে)
হাইকোর্ট এবং চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী (ইনসেটে)

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার নথি দ্রুত খুঁজে বের করার নির্দেশ

আশি-নব্বই দশকের বাংলা সিনেমার সাড়া জাগানো জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ব্যবসায়ী সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার হারিয়ে যাওয়া নথি দ্রুত সময়ে খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে নথি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা কেন তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকাজ শুরুর নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, পৃথক রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবু জোবায়ের হোসাইন সজীব। তার সাথে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

নথি গায়েবের ঘটনায় রিট

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার নথি গায়েব হওয়ার ঘটনায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন অ্যাডভোকেট আবু জোবায়ের হোসাইন সজীব। আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়ার পক্ষে তিনি এই রিট আবেদন করেন।

রিটে সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার নথি খুঁজে বের করে বিচার দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। এছাড়া মামলার নথি কেন পাওয়া যাচ্ছে না এবং নথি লুকানোর সঙ্গে কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করতে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। একইসঙ্গে মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতেও নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

রিটে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল–২ সহ সংশ্লিষ্ট ছয়জনকে বিবাদী করা হয়।

নায়ক খুনের মামলা গুম

গত ২৩ জানুয়ারি একটি গণমাধ্যমে ‘নায়ক খুনের মামলা গুম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানীর ক্লাব ট্রামসের নিচে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় তার বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে বিচারের জন্য পাঠানো হয় ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।

এরপর মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকি ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর বেঞ্চ শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রত্যাহার করা হয় হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশও। কিন্তু সেই রায় আর নিম্ন আদালতে পৌঁছায়নি। সেই মামলার নথিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।