গরীব ও অসহায়দের পক্ষে মামলা পরিচালনার শর্তে দণ্ডিত আইনজীবী প্রবেশনে মুক্ত
আইনজীবী (প্রতীকী ছবি)

তথ্য গোপন করে জামিন: প্রধান বিচারপতির কাছে আইনজীবীর লিখিত অভিযোগ

হত্যা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে হাইকোর্টের একাধিক বেঞ্চে আগাম জামিন আবেদন ও আদালতের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে আবেদন করেছেন গাইবান্ধা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. সাজু মিয়া।

আবেদনে আইনজীবী সাজু উল্লেখ করেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার ৩৯/২০২২ নম্বর মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ১১৪ ও ৩৪ ধারার গুরুতর জখমী ও সাক্ষী তিনি। প্রকাশ্য দিবালোকে তার পিতা মো. হাফিজার রহমানকে হত্যার অভিযোগে ছোট ভাই রাজু মিয়া এজাহারকারী হিসেবে এ মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলার আসামীদের মধ্যে মো. শাহজাহান আলী ও মো. মান্নান তথ্য গোপন ও আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারা মোতাবেক হাইকোর্টে একাধিক ফৌজদারি মিস মামলা দায়ের করেন।

এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি আসামিরা হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে গাইবান্ধার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে আদালত আসামিরদের গ্রেফতার না করার আদেশ দেন। আদেশের কপি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।

পরবর্তীতে আসামিরা উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির না হয়ে সকল তথ্য গোপন করে গত ১৬ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে হাজির হয়ে আগাম জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন শুনানি নিয়ে তাদেরকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে গাইবান্ধার দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

এ মামলায় প্রদত্ত ‘ল’ইয়ার্স সার্টিফিকেট’ ও আদালতের আদেশের কপি ইত্যাদির মধ্যে নানা অসঙ্গতি ও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপও সন্তোষজনক নয় বলেও আবেদনে উল্লেখ করেন অ্যাডভোকেট মো. সাজু মিয়া।

একইসঙ্গে এই আবেদনের সঙ্গে উচ্চ আদালতের দুই বেঞ্চের আদেশের কপি ও ল’ইয়ার্স সার্টিফিকেট সংযুক্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে প্রেরণ করেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি জমিসংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে গিয়ে গোবিন্দগঞ্জের শালমারা ইউনিয়নের ঘুঘাগাড়ামারা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় ওই গ্রামের হাফিজার রহমান, তাঁর ছেলে গাইবান্ধা বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সাজু মিয়া, সাদেক আলীর ছেলে শিক্ষানবিশ আইনজীবী আব্দুর রশিদসহ ছয়জন আহত হয়।

তাদের মধ্যে হাফিজার রহমান ও তাঁর ছেলে অ্যাডভোকেট সাজু মিয়ার অবস্থা গুরুতর হলে দুজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাফিজার রহমান মারা যান।

এ ঘটনায় ২৩ জানুয়ারি ওই গ্রামের শাহজাহান আলী মেম্বার, আইনুল ইসলাম, ঠাণ্ডা মিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন নিহত হাফিজার রহমানের আরেক ছেলে রাজু মিয়া।