তিন সন্তানসহ বিচারকের খাসকামরায় শাহানুর-আকতারা দম্পতি
তিন সন্তানসহ বিচারকের খাসকামরায় শাহানুর-আকতারা দম্পতি

যৌতুক মামলার জামিন শুনানিতে বিচারকের মধ্যস্থতায় টিকে গেল ১৭ বছরের সংসার

পারিবারিক কলহের জেরে বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ায় রাগের মাথায় স্ত্রী আকতারা বানুকে তালাক দিয়েছিলেন শাহানুর ইসলাম। এরপর স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন স্ত্রী। ওই মামলায় জামিন নিতে এসে বিচারকের মধ্যস্থতায় অবশেষে ভুল বুঝতে পেরে সন্তান ও স্বজনদের উপস্থিতিতে আবারও আকতারাকে বিয়ে করেন শাহানুর। আদালতের মধ্যস্থতায় টিকে গেল ১৭ বছরের সংসার। 

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমানের খাসকামরায় রোববার (২৪ এপ্রিল) এ বিরোধের মীমাংসা হয়।

আদালতে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট হাজিজুর রহমান।

বিচারক, দুই পক্ষের আইনজীবী, ওই দম্পতির তিন সন্তান ও স্বজনদের উপস্থিতিতে তাঁদের বিয়ে পড়ান আদালত মসজিদের ইমাম আবদুল খালেক। বিয়েতে স্ত্রী আকতারার (৩৬) হাতে নগদ এক হাজার টাকা মোহরানা বুঝিয়ে দেন স্বামী শাহানুর (৪২)। এ সময় সেখানে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ৫ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের মকছেদ আলীর ছেলে কৃষক শাহানুরের সঙ্গে একই ইউনিয়নের আরাজী-শিকারপুর এলাকার আশরাফ আলীর মেয়ে আকতারার বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে ১৫ ও ৪ বছর বয়সী ২টি মেয়ে এবং ৯ বছর বয়সী ১টি ছেলে আছে। ছয় মাস আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের জেরে আকতারা বাবার বাড়িতে চলে যান। তাঁর সঙ্গে দুই মেয়ে গেলেও বাবার সঙ্গে ছিল ৯ বছর বয়সী ছেলে।

রাগের মাথায় শাহানুর গত বছরের ১২ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে স্ত্রী আকতারাকে তালাক দেন। পরে চলতি বছরের ৩০ মার্চ আকতারা তাঁর স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করে ২৪ এপ্রিল আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন।

নির্ধারিত দিনে মামলার আসামি শাহানুর আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। তখন আদালত বাদী-বিবাদী ও তাঁদের সন্তানদের দেখে দুই পক্ষকে ডেকে মীমাংসার প্রস্তাব দিলে দুজনই রাজি হয়ে যান।

সন্তান ও স্বজনদের উপস্থিতিতেই বিচারকের খাসকামরায় আবারও বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় আকতারার বাবা আশরাফ আলী নতুন করে মেয়েকে শাহানুরের হাতে তুলে দেন। এ সময় তাঁদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।