বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

অর্থঋণ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুতে রিট: আইনি জটিলতা নিষ্পত্তিতে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন

অর্থ ঋণ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে আত্মসমর্পণ করতে হবে নাকি পলাতক থেকেই হাইকোর্টে রিট পিটিশন ফাইল করা যাবে, তা নিয়ে উদ্ভূত আইনি জটিলতা নিষ্পত্তির জন্য তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

আজ বুধবার (৮ জুন) সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার ইকবাল আহমেদ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আইনজীবীর দেওয়া তথ্য মতে, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের টাকা আদায়ের জন্য অর্থ ঋণ আদালত ঋণগ্রহীতা, ঋণের গ্যারান্টর ও বন্ধকদাতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে থাকেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর অনেক ঋণগ্রহীতা বা দায়িক আদালতে আত্মসমর্পণ না করে হাইকোর্টে বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর পলাতক থাকা অবস্থায় রিট পিটিশন ফাইল করার বিষয়ে হাইকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চ ভিন্ন ভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করে সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।

সম্প্রতি এই বিষয়ে বিচারপতি জে.বি.এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত এক আবেদন (রিট পিটিশন নং ৬৮৪৬/২০১৬) শুনানির জন্য উত্থাপন করা হয়।

শুনানিকালে সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার ইকবাল আহমেদ আদালতকে জানান, অর্থ ঋণ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে কোন ব্যক্তি আত্মসমর্পণ না করে, অর্থাৎ পলাতক থাকা অবস্থায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করতে পারেন না।

কারণ হিসেবে অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমেদ উল্লেখ করেন, ওয়ারেন্ট ক্রিমিনাল প্রসিডিং হওয়ায় আইন অনুযায়ী পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির প্রযোজ্য হবে এবং আত্মসমর্পণ না করে কোন ব্যক্তি আদালত থেকে আইনগত প্রতিকার পেতে পারেন না।

আইনজীবী ইকবাল আহমেদ তাঁর যুক্তির পক্ষে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি সৈয়দ জিয়াউল করিমের এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কেস রেফারেন্স হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করেন।

অপরদিকে রিট আবেদনকারী মো. জহিরুল হকের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আফরোজা নাজনীন আক্তার আদালতকে বলেন, অর্থ ঋণ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে কোন ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ ছাড়াই হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করতে পারেন।

আইনজীবী নাজনীন আক্তার তাঁর যুক্তির পক্ষে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত কেস রেফারেন্স আদালতে উপস্থাপন করেন।

এমতাবস্থায়, একই বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের বিভিন্ন বিচারপতির ভিন্ন ভিন্ন অভিমত ও সিদ্ধান্ত থাকায় প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তিন বিচারপতির সমন্বয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন।

বিচারপতি জে.বি.এম হাসান, বিচারপতি রাজিক-আল-জলিল ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর বেঞ্চে আবেদনটির ওপর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ জুন) শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।