দুই আইনজীবীর রিমান্ড: অধস্তন আদালতের নথি তলব করলেন হাইকোর্ট
বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

পেটে গজ রেখে সেলাই: উন্নত চিকিৎসার নির্দেশ, ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের সময় পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় ভিকটিম শারমিন আক্তার শিলাকে উন্নত চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ভুক্তভোগীকে যথোপযুক্ত হাসপাতালে স্থানান্তর করে উন্নত চিকিৎসা দিতে বরিশাল সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জনস্বার্থে দায়ের করা এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (৮ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পাশাপাশি ভিকটিম শারমিন আক্তার শিলাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পৃথক রুলে ভুক্তভোগী নারীর চিকিৎসায় অবহেলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত করে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জীবন নেছা মুক্তা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।

এর আগে অপারেশনের সময় পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় ভিকটিম শারমিন আক্তার শিলাকে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জীবন নেছা মুক্তা জনস্বার্থে রিট আবেদনটি দায়ের করেন। রিটে স্বাস্থ্য সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল মেডিকেলের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষ হাসপাতালে গেলে ডাক্তাররা কথা বলতে চান না: হাইকোর্ট

জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল রাতে সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা জিয়াউল হাসানের স্ত্রী শারমিন আক্তার শিলা। অস্ত্রোপচারের পর থেকে পেটে ব্যাথা অনুভব করছিলেন তিনি। এ জন্য সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কিছু দিন পর পেটে প্রচণ্ড ব্যাথা শুরু হয়। ফুলে যায় পেট। ২১ মে পেট ফুটো হয়ে পুঁজ বের হয়। তাৎক্ষণিক ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানে ২২ মে পুনরায় অপারেশন করা হয়।

এক পর্যায়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করালে সেখানের চিকিৎসক জানান পেটে গজ রয়েছে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। শেষে হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করালে ২২ মে সকালে অপারেশন করা হয়।

পুনরায় অস্ত্রোপচার করে গজ বের করা শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নাজিমুল হক
তখন বলেন, দীর্ঘদিন গজ থাকায় পেটের ভেতরে পচন ধরে নাড়ি ফুটো হয়েছে। অপারেশন করা হয়েছে। তার সার্বিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।