ভুক্তভোগীকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বললেন সুপ্রিম কোর্ট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

জুরাইনের ঘটনায় অপরাধী যেই হোক তার বিচার হবে: সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকার জুরাইনে মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতিকে আটকানোর পর কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধী যেই হোক তার বিচার হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

ওই মামলায় দুই আইনজীবীর রিমান্ড মঞ্জুরের পর মামলার নথি তলব করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের বিষয়ে শুনানির সময় আজ মঙ্গলবার (১৪ জুন) এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

আদালতে আইনজীবীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুরাদ রেজা, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

এ সময় আপিল বিভাগ রিটের পক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা বিচারিক আদালতে দুই আইনজীবীর জামিন আবেদন করুন। তারা জামিন না দিলে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করুন। হাইকোর্টে জামিন না দিলে তারপর আমরা দেখব।

আদালতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ যদি অপরাধ করে তার বিচার হবে আর আইনজীবী অপরাধ করলে তারও বিচার হবে।

পরে আদালত আগামী রোববারের মধ্যে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে নির্দেশ দেন এবং শুনানি মুলতবি করেন।

গত ১২ জুন রাজধানীর জুরাইনে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় দুই আইনজীবীর রিমান্ড মঞ্জুরের পর ওই মামলার নথি তলব করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত ওই বেঞ্চে এমন তথ্য জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

সেদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার আদালতকে জানান, সকালে বিশেষ চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন। সোমবার (১৩ জুন) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির জন্যে নির্ধারিত রয়েছে। এরপর আদালত শুনানি মুলতবি করেন।

রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগের মামলায় দুই আইনজীবী রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারিক আদালত। এরপর এক রিটের শুনানি নিয়ে গত ৯ জুন এ মামলার নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রিমান্ড কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছিলেন আদালত।

জুরাইনের এ ঘটনায় দুই আইনজীবীকে রিমান্ডে নেওয়ায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ ফজলে ইলাহীর পক্ষে আইনজীবী এবিএম শিবলী সাদেকীন।

গত ৮ জুন রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুই আইনজীবীসহ ৫ জনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এ রিমান্ড আদেশ দেন।

রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শিক্ষানবিশ আইনজীবী সোহাবুল ইসলাম রনি ও তার শ্যালক আইনজীবী ইয়াসিন আরাফাত, স্থানীয় বাসিন্দা মো. শরীফ, মো. নাহিদ এবং মো. রাসেল।

অন্যদিকে, মামলার একমাত্র নারী আসামি আইনজীবী ইয়াসিন জাহান ভূঁইয়া নিশানের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। তবে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে রিমান্ড আপাতত স্থগিত রয়েছে বলেও জানা গেছে।