আদালত পরিদর্শনে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ নিষ্পত্তি করলেন বিচারপতি ফাতেমা নজীব

আদালত পরিদর্শনে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ নিষ্পত্তি করলেন বিচারপতি ফাতেমা নজীব

সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালে অধস্তন আদালত পরিদর্শনে যান উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা। অবকাশে নিয়মিত কাজ কাজের অংশ হিসেবে গাজীপুর জেলা আদালত পরিদর্শনে গিয়েছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফাতেমা নজীব।

গাজীপুর আদালত পরিদর্শনকালে গত সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একটি বিরোধ আপোষ-মিমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেন উচ্চ আদালতের এই বিচারক।

গাজীপুর জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সহকারী জজ) সুমাইয়া রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট লিগ্যাল এইড সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানার সাতাইশ শরীফ মার্কেট এলাকার এক গৃহবধু তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক, নারী নির্যাতন ও ভরনপোষণ না করার অভিযোগে এ বছরের ৪ সেপ্টেম্বর গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১২ সেপ্টেম্বর বিষয়টির আপোষ মিমাংসার উদ্দেশ্যে গাজীপুর জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে মিমাংসা সভার আয়োজন করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে আপস নিষ্পত্তির জন্য আলোচনায় এদিন সকালে উভয় পক্ষের অভিভাবকে এবং দুইজন প্রতিবেশী গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে উপস্থিত হন।

এদিন গাজীপুর কোর্ট পরিদর্শনে আসা বিচারপতি ফাতেমা নজীব এ সময় সেখানে আকস্মিকভাবে উপস্থিত হন। তিনি বিষয়টি জেনে নিজে উপস্থিত সবার বক্তব্য শুনে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ওই সভায় স্বামী-স্ত্রী ও তাদের স্বজনদের উপস্থিতিতে সাতটি শর্তে ওই বিরোধ নিষ্পত্তি করেন।

এ সময় বিচারপতি ফাতেমা নজীব স্বামী ও স্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা ঠিকমতো চলবে, ভবিষ্যতে আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে সে জন্য উভয়ে সচেতন থাকবে। পারিবারিক বিরোধের ক্ষেত্রে আপস নিষ্পত্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব বিরোধে মোকদ্দমা দায়ের করার আগে আমাদের আপস মীমাংসার চেষ্টা করা উচিত।’

উচ্চ আদালতের এই বিচারক বলেন, ‘পারিবারিক সম্পর্কগুলো যেন ঠিক থাকে সে জন্য আপস মীমাংসার চেষ্টা না করেই মোকদ্দমা দায়ের কাম্য নয়। একটি সংসার ভেঙে গেলে সে সংসারের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়। তারা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না।’

মিমাংসা সভায় মামলার বাদি ও বিবাদী আপোষ-মিমাংসার শর্ত মেনে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে নিষ্পত্তি সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসার (সহকারী জজ) সুমাইয়া রহমান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মো. শাহজাহান, বাদী-বিবাদীর আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানার সাতাইশ শরীফ মার্কেট এলাকার জাকির হোসেন শুভর সঙ্গে ২০২০ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই এলাকার আরিফা আক্তার ফারহানার। তাঁদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। শুভ আগে প্রাইভেট কার চালাতেন, এখন বেকার। নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে কলহ হতো। পরবর্তীতে আরিফা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক, নারী নির্যাতন ও ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগে গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন।