চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কুষ্টিয়া
চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কুষ্টিয়া

এবার কুষ্টিয়ায় বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীর অশোভন আচরণের অভিযোগ

কুষ্টিয়ায় আদালতের এজলাসে দাঁড়িয়ে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম দুলালসহ কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কুদ্দুসের আদালতে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইনজীবী নূরুল ইসলাম দুলাল। উল্টো বিচারকের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগ করেন তিনি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিচারক আবদুল কুদ্দুসের আদালতে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ১৮ ধারার একটি মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানির সময় বিজ্ঞ আদালত আসামির জামিন নামঞ্জুর করলে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী নূরুল ইসলাম দুলাল উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

এসময় বিবাদী পক্ষের আইনজীবী গোলাম সরোয়ার, প্রবীর কুমার উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় আদালতপাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আইনজীবীর এমন আচরণে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট এজলাস ত্যাগ করে খাস কামরায় চলে যান। বাদীপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মুকাদ্দেস হোসেন মোকা ও সরোয়ার হোসেন।

আইনজীবীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কুদ্দুসের আচরণ ভালো না। তিনি নিজেকে অনেক ক্ষমতাবান ও বড় মনে করেন। সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করেন না, দায়িত্ব পলনে ব্যর্থ। একজন বিচারক হিসেবে তার সচেতন হওয়া উচিত, আইনজীবীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা উচিত।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আদালত পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা ও সদস্যরা বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি মামলার শুনানি চলছিল। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। এতে আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

এরপর ম্যাজিস্ট্রেট এজলাস ত্যাগ করে খাস কামরায় চলে যান। এরপর আইনজীবীরাও এজলাস ত্যাগ করেন। আইনজীবীরাও বিচারকের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। এ ঘটনার পর বিকাল ৫টা পর্যন্ত ওই বিচারক এজলাসে বসেননি বলেও জানান তারা।

আদালতে গিয়ে এ বিষয়ে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাগবিতণ্ডার বিষয়টি শুনেছি। আমি আদালতের বাইরে আছি। এখন এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারছি না।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম দুলাল বলেন, আমার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কুদ্দুস আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এতে আইনজীবীরা বিচারকের সঙ্গে তর্কাতর্কি করেছেন। এরপর বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। আইনজীবীরাও এজলাস ত্যাগ করেন।