সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন
সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন

পদত্যাগ করলেন সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সোমবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বার সম্পাদকের কার্যালয়ে এ পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এর আগে গত ২ মার্চ নির্বাচন পরিচালনার জন্য উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের বৈঠকের পর ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপ-কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরীকে পুনর্গঠিত নতুন উপ-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। মো. মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ ইলিয়াস ভূঁইয়া (কচি), এ এস এম মোক্তার কবির খান, মোহাম্মদ আশরাফ-উজ-জামান খান, মো. আসাদুজ্জামান মনির ও এস এম গোলাম মোস্তফা তারাকে উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

এর আগে উপ-কমিটি নিয়ে বর্তমান কার্যকরী কমিটি বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। কার্যকরী কমিটির সম্পাদক (আওয়ামী লীগ সমর্থিত) আবদুন নূর দুলাল আইনজীবী শাহ খসরুজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উপ-কমিটি ঘোষণা দেন।

অপরদিকে কার্যকরী কমিটির সিনিয়র সহ-সম্পাদক (বিএনপি সমর্থিত) মাহফুজ বিন ইউসুফ আইনজীবী ড. এজেডএম ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উপ-কমিটি ঘোষণা করেছিলেন।

পরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বৈঠক করেন। বৈঠকে ঐক্যমতে আসার পর পুনর্গঠিত উপ-কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নির্বাচনী তফসিল

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুন নূর দুলাল সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৪ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ ও ১৬ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৩-২৪ বর্ষের কার্যকরী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় ছিল। আর ৫ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টায় মনোনয়ন পত্র বাছাই এবং ৮ মার্চ বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ঘোষণা করা হয়।

কার্যকরী কমিটির সভাপতি পদে ১টি, সহ-সভাপতি পদে ২টি, সম্পাদক পদে ১টি, কোষাধ্যক্ষ পদে ১টি, সহ-সম্পাদক পদে ২টি এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে ৭টি পদসহ সর্বমোট ১৪টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সাদা প্যানেল

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে গুলশানে আইনমন্ত্রীর বাসভবনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস আসন্ন নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

নির্বাচনে সভাপতি পদে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও সমিতির বর্তমান সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সম্পাদক পদে সমিতির বর্তমান সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুন নূর দুলালকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

সম্পাদকীয় অন্যান্য পদে মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- সহ সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী আজম ও অ্যাডভোকেট জেসমিন সুলতানা, কোষাধ্যক্ষ পদে মাসুদ আলম চৌধুরী, সহ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট নূর এ আলম উজ্জ্বল এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হারুন-উর রশীদ।

এছাড়া অ্যাডভোকেট মোঃ সাফায়েত হোসেন সজীব, মহিউদ্দিন রুদ্র, শফিক রায়হান শাওন, সুভাষ চন্দ্র দাস, নাজমুল হোসেন স্বপন, মোঃ দেলোয়ার হোসেন ও মনিরুজ্জামান রানা সদস্য পদপার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন।

নীল প্যানেল

গত ৪ মার্চ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এর স্বাক্ষরে নীল প্যানেলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়।

নির্বাচনে সভাপতি পদে সমিতির ৭ বারের সাবেক সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন এবং সম্পাদক পদে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

সম্পাদকীয় অন্যান্য পদে নীল প্যানেলের মনোনীত প্রার্থীরা হলেন সহ সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও অ্যাডভোকেট সরকার তাহমিনা সন্ধ্যা, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, সহ সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন ও অ্যাডভোকেট মোঃ আবদুল করিম।

এছাড়া সদস্য পদে অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার, অ্যাডভোকেট ফজলে এলাহী অভি, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট রাসেল আহমদ, অ্যাডভোকেট আশিকুজ্জামান নজরুল, ব্যারিস্টার ফয়সাল দস্তগীর ও অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান আহাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২৩ কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ সাতটি পদে বিজয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। বাকী সাতটি পদে জিতেছিল বিএনপি সমর্থকরা।