‘আদম’ সিনেমার প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
‘আদম’ সিনেমার প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

‘আদম’ সিনেমার প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে ‘আদম’ নামক সিনেমার সেন্সর সনদপত্র বাতিল করে প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা জামিল হাসানের পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ইসমাঈল হোসেন এ রিট দায়ের করেন।

রিটে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, আদম সিনেমার পরিচালক আবু তৌহিদ হিরন, প্রযোজক তামিম হোসাইনসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

আইনজীবী ইসমাঈল হোসেন ভূঁইয়া রিটের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় ও সেন্সর আপিল কর্তৃপক্ষ আদম সিনেমার সেন্সর সনদ বাতিল ও প্রচার-প্রদর্শন বন্ধে আবেদন করা হয়েছিল। তবে সংশ্লিষ্টরা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হাইকোর্টে রিট করেছি।

সেন্সর সনদপত্র বাতিল ও প্রদর্শন বন্ধে আবেদন

এর আগে গত ১২ এপ্রিল ‘আদম’ নামক সিনেমার সেন্সর সনদপত্র বাতিল ও প্রদর্শন বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রী পরিষদ সচিব ও তথ্য সচিব বরাবর আবেদন করেন জামিল হাসান।

ওই আবেদনে বলা হয়, গত ২ এপ্রিল আসন্ন ঈদুল ফিতরে মুক্তির জন্য ‘আদম’ নামীয় একটি বাংলা সিনেমার ট্রেইলার প্রকাশিত হয়েছে। আমি একজন সচেতন ও শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে ফেসবুক ও ইউটিউবসহ নানা সামাজিক মাধ্যমে সিনেমাটির ট্রেইলার এবং নেটিজেনদের মন্তব্য দেখেছি। দেশের নানান পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট পড়ে জানতে পারি- ২০২২ সালে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড গত ১৯ নভেম্বর সিনেমাটি প্রদর্শনের জন্য সেন্সর সনদপত্র/ছাড়পত্র প্রদান করেছে।

প্রকাশিত সিনেমাটির ট্রেইলার ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বরাতে জানা যায়- সিনেমার গল্পে আদম নামে একটি ছেলের সঙ্গে কামিনী নামে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায় কামিনী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরে। কুমারী কামেনীর অন্তঃসত্ত্বা নিয়ে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্ট হয়।

সেখানে দেখা যায়- মুসলিম সমাজে ফতোয়াকে উসকে দেয়া হয়েছে। গ্রাম্য বিচারে কামিনীকে মাটিতে পুঁতে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলার ফতোয়া দেন ইমাম সাহেব। হিন্দু পুরোহিত কামিনীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত দেন। বৌদ্ধ ধর্ম প্রধান জীব হত্যা মহাপাপ এবং খ্রিষ্টান যাজক অনাগত সন্তানকে পৃথিবীর আলোয় আনতে মতামত দেন। শালিসের মধ্যে কেউ একজন আজান দেন। তখন তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, এই থাম। আজান দিচ্ছে… তুই জানস ও হিন্দু না মুসলমান।

আবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সিংহভাগ জনগণ মুসলিম এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী। কিন্তু সিনেমাটিতে মুসলিম, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মকে পাশাপাশি দাড় করিয়ে ধর্মীয় উসকানি দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজানের পর ঈদুল ফিতরে এই ধরনের ধর্মীয় উসকানিমূলক সিনেমা মুক্তি দেওয়া হলে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে ফেসবুক এবং ইউটিউবেও অনেক নেটিজেন সিনেমাটির বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বাংলাদেশের মানুষ নিজ নিজ ধর্মের অনুশাসন মেনে চলতে আগ্রহী। সিনেমাটিতে একইসাথে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো সংলাপ ও দৃশ্য রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। যা আমাদের সংবিধানের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। এ অবস্থায় সিনেমাটির সেন্সর সনদপত্র/ছাড়পত্র বাতিল করে প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধ করা প্রয়োজন।