সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মামলার বাদীকে আদালতের শোকজ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন

সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মামলার বাদীকে আদালতের শোকজ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের নামে শ্রম আদালতে ‘হয়রানিমূলক’ মামলা করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। এ মামলায় গুলশানের একটি হোটেলে শ্রম আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলাটি গতকাল সোমবার (২৯ মে) প্রথম শ্রম জজ আদালতে মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) শ্রম জজ আদালতের চেয়ারম্যান (বিচারক) মো. শওকত আলী স্বাক্ষরিত আদেশের কপি হাতে পান বিবাদীর আইনজীবী।

এই আদেশে সাঈদ খোকনের জামিন আবেদন মঞ্জুর ও ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তথ্য-প্রমান ছাড়া মামলা করায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন প্রথম শ্রম জজ আদালতের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী।

এ মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) মো. মাসুদ আলম। ফৌজদারী মামলা নম্বর ৭০/২০২২। মামলায় সাঈদ খোকন ছাড়াও জেরাল্ড রেবেরো ও তৌতম ব্রামা নামে আরও দুইজনকে বিবাদী করা হয়েছে। জেরাল্ড রেবেরো ও তৌতম ব্রামা সাঈদ খোকনের ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী।

ওই মামলার বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, মামলাটির সঙ্গে তাঁর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। গুলশানে যে হোটেলে শ্রম আইন লংঘনের অভিযোগ করা হয়েছে, সেটির মালিকানা বা পরিচালনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তাকে হয়রানির উদ্দেশ্যেই এই মামলাটি করা হয়েছে।

ওই মামলার এজহারে বলা হয়, মামলাটির বাদী ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর রোডের হোটেল লং বীচ পরিদর্শন করেন। তখন তিনি বাংলাদেশ শ্রম আইন মোতাবেক শ্রমিকদের জন্য সার্ভিস বইয়ের ব্যবস্থা না থাকা, নির্ধারিত তথ্য সম্বলিত শ্রমিক রেজিষ্টার সংরক্ষণ না করা, শ্রমিক বা কর্মচারীদের আইন মোতাবেক ছুটি না দেওয়া, রেজিষ্টার সংরক্ষণ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম দেখেন। পরে লং বীচ কর্তৃপক্ষকে রেজিষ্টার্ড ডাকে তাগিদপত্র পাঠান।

কিন্তু বিবাদীরা কোনো জবাব প্রদান করেন নাই। তাই বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬, ধারা ৩০৩(৫) এবং ৩০৭ মোতাবেক প্রথম শ্রম আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেন মাসুদ আলম। এই মামলায় লং বিচ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ব্যবস্থাপক জেরাল্ড রেবেরো, সহকারী ব্যবস্থাপক তৌতম ব্রামার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম শ্রম আদালত সূত্র জানায়, ওই মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছিল। সে মোতাবেক সোমবার (২৯ মে) দুপুরে আদালতে মোহাম্মদ সাঈদ খোকনসহ বাকি দুইজন বিবাদী উপস্থিত হোন।

বিবাদীদের আইনজীবী সেলিম আহসান খান বলেন, মামলায় লং বীচ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বিবাদী মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের নাম দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং লং বীচের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। যার ট্রেড লাইসেন্স আদালতে দাখিল করা হয়েছে। অন্য দুই বিবাদীরাও লং বীচের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন। এটি একটি হয়রানিমূলক মামলা। তাই আদালত আমাদের শুনানী গ্রহণ করে বাদীকে শোকজ করেছেন। আগামী ৬ জুন পরবতী শুনানীর দিন ধার্য করেছেন আদালত। আমরা আশা করি ওই মিথ্যা মামলা করার দায়ে আদালত বাদীকে উপযুক্ত শাস্তি দিবেন।