প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বগুড়ার সেই বিচারককে প্রত্যাহার
বিচারক (প্রতীকী ছবি)

বিচারক কানিজ ফাতেমাকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত

শিক্ষাছুটিতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দীর্ঘদিনেও দেশে ফিরে না আসায় যুগ্ম জেলা জজ কানিজ ফাতেমাকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা। ফলে তিনি কোনও বেতন, ভাতা, পেনশন সুবিধা পাবেন না বলে জানা গেছে।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির অংশগ্রহণে রবিবার (১৮ জুন) অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ফুলকোর্ট সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এদিকে একই সভায় দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৯৬ জন বিচারকের পদোন্নতির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে ফুলকোর্ট সভা।

জানা গেছে, শিক্ষাছুটি নিয়ে তিন বছর এক মাসের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন যুগ্ম জেলা জজ কানিজ ফাতেমা। ২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত তার ছুটি মঞ্জুর করে সরকার। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছুটির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। ওই ছুটি শেষ হলে তিনি আবারও ছুটির আবেদন করেন। তবে তা নামঞ্জুর করে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে যুগ্ম জেলা জজ কানিজ ফাতেমা সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করতে থাকেন। ছুটি ছাড়া সেখানে অবস্থানের দুই মাস পর তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় আইন মন্ত্রণালয় থেকে। চিঠির জবাবও দেন ওই বিচারক। তবে ওই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হলে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও সার্ভিস ত্যাগের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে মন্ত্রণালয়। মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে মতামত চেয়ে চিঠি দেওয়া হলে তাতে একমত পোষণ করেন সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী, তদন্তের জন্য উপ-সচিব এ কে এম এমদাদুল হককে দায়িত্ব দেয় মন্ত্রণালয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিলে বিচারক কানিজ ফাতেমার বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘সার্ভিস ত্যাগ’-এর দায়ে বিধি ১৬ (খ) (৪) অনুযায়ী, চাকরি থেকে বরখাস্তসহ গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর তা সুপ্রিম কোর্টে মতামতের জন্য পাঠানো হয়।

এরপর গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্টের জিএ কমিটি সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে। সেই সিদ্ধান্ত রবিবার (১৮ জুন) সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় অনুমোদন পেলো।

প্রসঙ্গত, ফুলকোর্ট সভায় বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিচার বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে, সে বিষয়েও ফুলকোর্ট সভায় আলোচনা হয়। পদাধিকারবলে প্রধান বিচারপতি এ সভার সভাপতিত্ব করে থাকেন।