সাঈদীর লাশের পাহারায় হাজারো পুলিশ কেন, প্রশ্ন বিচারপতির
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার

সাঈদীর লাশের পাহারায় হাজারো পুলিশ কেন, প্রশ্ন বিচারপতির

জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার বলেছেন, আল্লামা নামধারী আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন মানুষ মারা গেছে। তাকে পাহারা দেওয়ার জন্য হাজার হাজার পুলিশ সারা রাত জাগছে। সে কী এতই জ্ঞানী ছিল বাংলাদেশে!

আজ মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে শোক দিবসের আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ পুলিশি পাহারা প্রসঙ্গে বিচারপতি আবু আহমেদ বলেন, ‘গতকাল রাতে আমার দুই ছেলে (পুলিশ কর্মকর্তা) বললো- সাঈদী মারা গেছে। এজন্য দাঙ্গা-হাঙ্গামা হতে পারে। পরে রাতেই ঢাকার বাইরে থেকে পুলিশ এনে মোতায়েন করা হয়। কেন? এই শঙ্কা কেন আসবে এই দেশে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি, সেখানে কেন ৫২ বছর পর শঙ্কা আসবে। তারা কী তাহলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চাইতেও বেশি ক্ষমতাধর। আমার তো মনে হয় তাই। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন মানুষ মারা গেছে, যার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী আমি জানি না। আল্লামা নামধারী। সে কি এতই জ্ঞানী ছিল বাংলাদেশে। তাকে পাহারা দেওয়ার জন্য হাজার হাজার পুলিশ সারা রাত জাগছে। ভোরবেলা পিরোজপুরে নিয়ে গেছে।’

‘ম্যাসেজ আছে, আমার মোবাইলে আছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে সাহস করতে হবে আরও। কমিশন হইতে হবে। কমিশনের রিপোর্ট হইতে হবে, জাতির কাছে সেই রিপোর্ট থাকবে, ওই তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে বিচার হতে হবে’, যোগ করেন এ বিচারপতি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এ সদস্য বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসী ও অপরাধী সংগঠন বলা হয়েছে। আজকের শোক দিবসে প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি পেশ করে বলতে চাই- তাদের বিচারের জন্য আইনের সংশোধনী দরকার। কী সাজা হবে, সেটা কেন হচ্ছে না, সংশ্লিষ্ট মহলে আপনি জানুন। আমরা বিচার করতে চাই। কী হবে বিচার করলে। হত্যা করবে? হত্যার বিষয়টি জেনেই যুদ্ধে গিয়েছিলাম।’

জামায়াতের বিচার দাবি করে আবু আহমেদ জমাদার বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা আছে। সাক্ষী সাবুদ এখনো আছে, বিচার কেন করা হবে না? রাজাকারের জন্য দেশ নয়, এটা মুক্তিযোদ্ধাদের বসবাসের জন্য। আমার আছে আর কয়েক মাস। আমাকে যদি বলা হয়, এই বিচার করলে গুলি করা হবে তবুও আমি বলব বিচার করব।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম,বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান, বিচারপতি জে বি এম হাসান, বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল,বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার, বিচারপতি মো.বশির উল্লাহ।

এসময় হাইকোর্ট বিভাগের অন্যান্য বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।