১১ বছরের আইনি লড়াই শেষে আশিয়ান সিটির পক্ষে রায়
সুপ্রিম কোর্ট এবং আসিয়ান সিটি

১১ বছরের আইনি লড়াই শেষে আশিয়ান সিটির পক্ষে রায়

আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কার্যক্রমের বৈধতাসংক্রান্ত রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) মঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে রাজধানীর উত্তরা ও বিমানবন্দরসংলগ্ন ৩৩ একর জায়গায় আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম চালাতে আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড -এর আইনগত বাধা নেই।

আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কার্যক্রমের বৈধতাসংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিট আবেদনকারী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল নিষ্পত্তি করে আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

আদালতে বেলাসহ আপিলকারীদের (হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীদের) পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও প্রবীর নিয়োগী শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মিনহাজুল হক চৌধুরী।

আশিয়ান সিটির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী ও আহসানুল করিম। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, মো. হোসনে মোবারক ও রেদওয়ান আহমেদ রানজিব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

আশিয়ান সিটি কর্তৃপক্ষের অন্যতম আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, ‘আশিয়ান সিটি প্রকল্প চালাতে পারবে বলেছেন আপিল বিভাগ।’

রায় সম্পর্কে আপিলকারী পক্ষের অন্যতম আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আশিয়ান সিটির রিভিউ মঞ্জুর করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। ৩৩ একর ভূমিতে প্রকল্প চালাতে পারবে আশিয়ান সিটি। অর্থাৎ ৩৩ একর ভূমিবাবদ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে।’

প্রেক্ষাপট

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ অনুমোদন ছাড়া ২০০৬ সালে উত্তরার দক্ষিণখান এলাকায় আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে—এমন দাবি করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) আটটি সংগঠন ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে।

চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে আশিয়ান সিটি কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রিভিউ মঞ্জুর করে প্রকল্প অবৈধ ঘোষণার রায় বাতিল করেন।

এই রায়ের রিট আবেদনকারী পক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। আপিল বিভাগ ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট লিভ মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টের দেওয়া রিভিউয়ের রায় স্থগিত করেন।

এ ছাড়া আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সব ধরনের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

২০১৭ সালে পৃথক আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ। আপিলের ওপর গত ৩১ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়। গত ৭ নভেম্বর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

দীর্ঘ ১১ বছরের আইনি লড়াই শেষে নিজেদের পক্ষে রায় পেলো আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড।