দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ জেলার ৪টি আসনের সবকটিটেই জিতেছেন আইনজীবীরা। জেলার দুটি আসনে আওয়ামী লীগ ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তাঁরা হলেন- অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া (হবিগঞ্জ-১), অ্যাডভোকেট ময়েজউদ্দিন শরীফ রুয়েল (হবিগঞ্জ-২), অ্যাডভোকেট আবু জাহির (হবিগঞ্জ-৩) এবং ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন (হবিগঞ্জ-৪)।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল)
এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংরক্ষিত সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী (ঈগল) প্রতীকে ৭৫ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু (লাঙ্গল) প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩০ হাজার ৭০৩।
মোট ৪৪ হাজার ৩৪৯ ভোটের ব্যবধানে সাবেক এমপি মুনিম চৌধুরী বাবুকে হারিয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন কেয়া চৌধুরী। ফলাফল ঘোষণার পরপর নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার বিভিন্নস্থানে আনন্দ মিছিল করেছে কেয়া চৌধুরী সমর্থকেরা।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হন। মনোনয়ন দেওয়া হয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে।
এরপর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরী। পরে আসন সমঝোতায় ২৫ আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ-১ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। কপাল পুড়ে ডা. মুশফিকের। ফলে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ও আওয়ামী লীগ সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু।
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ)
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-২ আসনে বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল।
রোববার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আসনটির বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এতে দেখা যায়, অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯৮ হাজার ৬০৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান ঈগল প্রতীকে ৪৯ হাজার ৩৪৮ ভোট পেয়েছেন। ৪৯ হাজার ২শ ৫৫ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল।
হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ)
এই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ৬০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এমএ মুমিন চৌধুরী বুলবুল পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৬ ভোট।
এ আসনে মোট কেন্দ্র রয়েছে ১৩১টি। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোছা. জিলুফা সুলতানা এ ফল ঘোষণা করেন।
হবিগঞ্জ–৪ (চুনারুঘাট–মাধবপুর)
এই আসনে চমক দেখিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বর্তমান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।
স্থানীয়ভাবে ঘোষিত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ব্যারিস্টার সুমন এক লাখ ৯৮ হাজার ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দুইবারের সংসদ সদস্য মাহবুব আলী পেয়েছেন ৪৭ হাজার ভোট।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন ২০২১ সালে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পদ থেকে বহিষ্কার হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত উপস্থিতি দিয়ে তিনি নেটিজেনদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।