চরমপন্থী পরিচয়ে আদালতে উড়ো চিঠি, আইনজীবীসহ কারাগারে ৩

চরমপন্থী পরিচয়ে আদালতে উড়ো চিঠি, আইনজীবীসহ কারাগারে ৩

চরমপন্থী পরিচয়ে আদালতে হুমকিমূলক উড়ো চিঠি দেওয়ার ঘটনায় যশোরে এক আইনজীবীসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তারা হলেন, বাঘারপাড়া উপজেলার বল্লামুখ গ্রামের আইনজীবী নব কুমার কুণ্ডু, পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার রবিউল ইসলাম রুবেল ও ষষ্ঠীতলা পাড়ার বাদল দাসের বাড়ির ভাড়াটিয়া মিহির কুমার সাহা। তিনজনই দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এর আগে, অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে ডিবি পুলিশের এসআই মফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এসআই মফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৫ মে রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক নারীকে চারজন মিলে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার মামলায় পুলিশের হাতে চারজনই গ্রেপ্তার হন। একজনের জামিন হলেও এখনো তিনজন কারাগারে।

তিনি জানান, এ মামলায় আসামিদের পক্ষে প্রথমে কাজ করেন আইনজীবী আবুল হোসেন। বর্তমানে আছেন আইনজীবী চিত্তরঞ্জন। তবে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও মামলাটি হাতে নিতে পারেননি আইনজীবী নব কুমার কুণ্ডু। নানা অপকৌশল অবলম্বনের পর অবশেষে গত ২৭ জানুয়ারি যশোর সিভিল কোর্ট মোড়ে মেসার্স ভাই ভাই ফটোস্ট্যাট নামের দোকানে যান তিনি। সেখানে গিয়ে নিজেকে চরমপন্থী দল বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বলে পরিচয় দেন।

এসআই আরও জানান, সেসময় ওই দোকানের কর্মচারী মিহির কুমার সাহা আদালতের বিচারকের উদ্দেশ্যে একটি হুমকিমূলক চিঠি কম্পোজ করে নব কুমার কুণ্ডুকে দেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি মিস ২৯/২৪ এর ধার্য তারিখ। ওইদিন আসামিদের জামিন দেবেন। অন্যথায় আপনার জীবন শেষ করে দেওয়া হবে এবং আপনার ওই অবস্থা হবে।’

এই চিঠি পাওয়ার ঘটনায় যশোর আদালত পাড়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পান ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বুধবার রাতে যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার বাসা থেকে রবিউল ইসলাম রুবেলকে আটক করা হয়।

তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিহির কুমার সাহা এবং নব কুমার কুণ্ডকে আটক করা হয়। পরে থানায় মামলা দিয়ে তাদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানান, ধর্ষণ মামলায় আসামিদের পক্ষে কাজ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন আইনজীবী নব কুমার কুণ্ডু। এ কাজ না পেয়ে মিহির কুমারকে দিয়ে চিঠি কম্পোজ করে রুবেলকে যশোর পোস্ট অফিস থেকে ডাকযোগে আদালতে পাঠাতে বলেন। রুবেল পোস্ট অফিসে গিয়ে নব কুমার কুণ্ডুর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে চিঠি পোস্ট করেন।

এ বিষয়ে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, ঘটনাটি তারা জেনেছেন। তদন্ত করে সত্যতা পেলে অভিযুক্ত আইনজীবী নব কুমার কুণ্ডুর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।