চার মাসের সাজার আপিল নিষ্পত্তি হয়নি ৪৯ বছরেও
উচ্চ আদালত

ব্যক্তিগত তথ্যে মোবাইল কোম্পানির ডেটাবেজ কেন, জানতে চায় হাইকোর্ট

জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডেটাবেজ তৈরিতে বিটিআরসির নির্দেশনা কেন বাতিল করা হবে না, সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বুধবার (২০ মার্চ) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট করা হয়। এইচআরপিবির পক্ষে আবেদনটি করেন আইনজীবী সারওয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাস উদ্দিন ভুঁইয়া, মামুন আলীম ও রিপন বাড়ৈ।

পরে মনজিল মোরসেদ জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিটিআরসি মোবাইল কোম্পানিগুলোকে তাদের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে তথ্যভান্ডার তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, মোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের গ্রাহকদের নাম, ঠিকানাসহ অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে। আগে মোবাইল কোম্পানিগুলো নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজ থেকে তাদের গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করত।

এ নির্দেশনার বাস্তবায়ন হলে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিজিকম টেকনোলজিসের সঙ্গে ডাটাবেজের মাধ্যমে গ্রাহকদের তথ্য যাচাই করতে হবে। এ ডাটাবেজের কারণে ডিজিকম টেকনোলজিসকে গ্রাহকপ্রতি ১০ টাকা দিতে হবে। বর্তমানে মোবাইল কোম্পানিগুলো একই কাজে নির্বাচন কমিশনকে পাঁচ টাকা দেয়।

শুনানিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, বিটিআরসির এ নির্দেশনা যদি মোবাইল কোম্পানিগুলো অনুসরণ শুরু করে, তাহলে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যাবে, যা জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন করবে। এ ছাড়া, জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা সংবিধান ও আইন পরিপন্থী।

শুনানি শেষে বিটিআরসি কর্তৃক মোবাইল কোম্পানিগুলোকে নির্বাচন কমিশন বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে দেওয়া আলাদা ডাটাবেজ তৈরির নির্দেশনা কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যসংবলিত তথ্য যা নির্বাচন কমিশন বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত, তা সংরক্ষণে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।